প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:২
কিশোরগঞ্জের ১০টি উপজেলা এবং হবিগঞ্জের একটি উপজেলার বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত স্থান রক্ষার্থে নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজ, ওয়েভ প্রটেকশন ও নদী ড্রেজিং/খাল পুনঃখনন করতে চায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কাজটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে খরচ হবে ১ হাজার ১১২ কোটি ৮ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।কিশোরগঞ্জের সদর, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলি, বাজিতপুর, ভৈরব, পাকুন্দিয়া, করিমগঞ্জ ও তারাইল উপজেলা এবং হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় এই কাজগুলো করা হবে।
পুরো নদীর দৈর্ঘ্য, কতটি স্থানে তীর প্রতিরক্ষা কাজ করা হবে, হাইড্রোলজিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল স্টাডি ও ব্যথেমেট্রিক সার্ভের মাধ্যমে বিস্তারিত ডিজাইন ও এর ভিত্তিতে ব্যয় প্রাক্কলন করা প্রয়োজন। নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজের পর কী কী গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা পাবে ছক আকারে তার তালিকা ডিপিপিতে সংযুক্ত করা যেতে পারে। এছাড়া নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজের চেইনেজ, স্থান (জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন), নকশা ও এ কাজে ব্যবহৃত মেটেরিয়ালের বিস্তারিত বিবরণ ডিপিপিতে উল্লেখসহ এ খাতে ব্যয় সর্বশেষ রেট সিডিউল অনুযায়ী যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা যেতে পারে।
ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল দিয়ে ৮টি ভিলেইজ প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ এবং ৮ কিলোমিটার ওয়েভ প্রটেকশনের মাধ্যমে হাওর এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বাসস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নিশ্চিত করা। পরিবেশের বিরূপ প্রভাব থেকে প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। ৫টি আবাসিক ও ৫টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে ৪৩ শতাংশ। পাশাপাশি করা হবে বৃক্ষ রোপন।
ঘোড়াউত্রা নদীটি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার শিংপুর ইউনিয়নে ধনু নদী থেকে উৎপন্ন হয়েছে। এরপর নদীটি একই জেলার বাজিতপুর উপজেলার মাইজচর ইউনিয়নে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। পথিমধ্যে সিঙ্গুয়া (সোয়াইজানী) নদীটি নিকলী উপজেলার নিকলী ইউনিয়নে ঘোড়াউত্রা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। বরাক নদী হতে কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তি হয়ে বদরপুর হয়ে অমলসিদ নামক স্থানে এসেছে এবং অমলসিদ থেকে নবীগঞ্জের ভিতরে প্রবেশ করে দিরাই হয়ে আজমিরীগঞ্জে এসে কালনী নাম ধারণ করে অষ্টগ্রামে ধলেশ্বরী নদীতে পতিত হয়েছে। ধলেশ্বরী নদী মেঘণা নদীতে পতিত হয়েছে।
নদীগুলোর গতির পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে হাওরের বিভিন্ন এলাকায় একেবেঁকে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে প্রবাহ বেড়ে গেলে দুই পাশের প্লাবন ভূমি দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। লুপ তৈরি হওয়ার ফলে আউটার বেন্ড এলাকায় নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীতে পলি জমা, নদীর তীর ভাঙন অব্যাহত আছে। এরকম বউলাই, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদেরও বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিচ্ছে। নদী ভাঙনের কারণে স্থানীয় জনসাধারণ বাড়িঘর, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসানালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জায়গাজমি হুমকির সম্মুখীন।