প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:২৪
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে পদোন্নতি নিয়ে তীব্র চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অর্ধশতাধিকেরও বেশি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধুমাত্র একজন নারী শিক্ষককে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য গোপনে পদোন্নতির বোর্ডের ব্যবস্থা করার গুঞ্জনে এ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের কঠোর আন্দোলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত বছর পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য, নিয়োগে দুর্নীতি ও খারাপ আচরণ বন্ধসহ আট দফা দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কিন্তু অর্ধশতাধিক শিক্ষক তিন বছরের বেশি মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছেন যাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রায় চার বছর এবং পাঁচ বছর চাকুরীকাল অতিবাহিত করলেও তাদের পদোন্নতির ব্যবস্থা এখনো গ্রহণ করা হয়নি। একইভাবে, বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে তাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে বর্তমান প্রশাসন একেবারেই উদাসীন। প্রশাসনের দায়িত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে প্রশাসনিক কাজ সময়মত করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও এ বিষয়টি শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা মেনে নিতে রাজি নন। তাদের দাবী,
সারাদেশের সকল সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও নিয়োগ ও পদোন্নতি বোর্ড আয়োজন করছে সঠিক সময়ে। এমন পরিস্থিতে লোক প্রশাসন বিভাগের একজন নারী শিক্ষকের পদোন্নতির জন্য বোর্ড বসানোর খবর জানাজানি হলে পদোন্নতি বঞ্চিত সকলের ভিতরে উত্তাপ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই মনে করেন এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ার পিছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডঃ মুহাম্মদ মহসিন উদ্দিন অনেকাংশে দায়ী।
ভুক্তভোগীদের দাবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং একমাত্র অধ্যাপক হওয়ার কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অধিকাংশ কমিটিতেই থাকেন এবং আইনের ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে বিভিন্ন শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের হয়রানি করেন। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে যে, সাবেক উপাচার্যের সময় তিনি গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন নারী শিক্ষককে ১১ মাসের ব্যবধানে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক বানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়ম ভঙ্গ করে নতুন নিয়ম তৈরি করেন।
সকল অভিযোগ অস্বীকার করে রেজিষ্টার ড. মুহাম্মদ মহসিন উদ্দিন জানান, ওই শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ ২ বছর ৮ মাস হয়েছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ মাস হলেও অন্য একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বাকী সময়টা কাজ করেছিলেন। গবেষনা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি একই ধরা হয়ে থাকে। এর আগে ২ বছর ৪ মাস চাকরিকাল অতিক্রম করা আরো কয়েকজনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ওই সময় ওই শিক্ষকের পদোন্নতি না দিলে তিনি কি জবাব দিতেন।