প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২০, ০:৩০
ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় চার নাইজেরিয়ান নাগরিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে তাদের সঙ্গে গ্রেফতার বাংলাদেশি নাগরিক টুম্পা আক্তার (২৩) ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চার নাইজেরিয়ানকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম ইলিয়াস মিয়া তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপরদিকে টুম্পা ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম ইলিয়াসা মিয়া ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ৭ আগস্ট তাদের পাঁচজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কাফরুল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেব্রবত বিশ্বাস প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
৬ আগস্ট রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত র্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর কাফরুল ও পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতাররা হলেন- অনুয়ারাহ নামাদি (৩২), রুবেন (৪১), মাকদু কেলভিন (৪১), ফ্রান্ক জ্যাকব (৩৫) এবং টুম্পা আক্তার (২৩)।
এ গ্রুপের টুম্পা আক্তার নিজেকে বাংলাদেশের কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। গ্রেফতারদের কাছ থেকে দুইটি মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট, ব্যাংকে অর্থ জমাকৃত বই, চেকবই, ১২টি মোবাইল, একটি প্রাইভেট জিপ, নগদ তিন লক্ষাধিক টাকাসহ হোয়াটসঅ্যাপ-ইমো-ফেসবুকে কথোপকথনের স্ক্রিনশটের কপি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
র্যাব ৪ জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে দামি উপহার পাঠানোর লোভ দেখিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে অনেক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ এ চক্র।
দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় থাকা নাইজেরিয়ান নাগরিকদের একটি চক্র অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদেরকে আমেরিকান নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিত। পরবর্তীতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির পর এক পর্যায়ে দামি উপহার বাংলাদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার জাল বিছানো হয়।
কিছুদিন পর বাংলাদেশের কাস্টম অফিসার পরিচয়ে এক নারী উপহার আসার কথা বললে তার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে এবং পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস ভ্যাট/শুল্ক বাবদ টাকা জমা দিতে হবে বলে জানায়। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী সেই বিদেশি প্রতারক বন্ধুকে জানালে বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।