প্রকাশ: ৯ আগস্ট ২০২০, ২৩:৩২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে করোনা ভাইরাসের মাঝেও মাদকের হাতবদল ও বেচাকেনা বেড়েছে। এখানে সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় অন্যান্য অপরাধ কমলেও বেড়েছে মাদকের মামলা। গত কিছুদিনে এখানে মাদক উদ্ধার ও পাচারকারী গ্রেপ্তারের ঘটনা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা, মদ ও ফেনসিডিল যেন মিলছে হাত বাড়ালেই। এই কারণে সমাজে বেড়েছে পারিবারিক কলহ সামাজিক অবক্ষয়।
গত ৫ আগস্ট কালিকচ্ছ এলাকার মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই দিনে শাহবাজপুর এলাকায় মাদকে আসক্ত ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন মা। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম মোসার নিকট পুলিশ তাকে হাজির করলে, ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক সেবনের অপরাধে তাকে ছয় মাসের কারাদন্ড দেন।
গত ৫ জুলাই উপজেলার বাড়িউড়া গ্রামের বসতবাড়ি থেকে ৩৪৫ বোতল ফেনসিডিল সহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। এমন আটকের খবর মিলছে নিত্যদিন। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে অঘোষিত লকডাউনে ছিল দেশ। এর মধ্যে অন্য সব অপরাধ কমে যাওয়ার তথ্য থানা থেকে মিললেও মাদকের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। গতমাসের উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় একাধিক জনপ্রতিনিধিরা সভায় বলেন, করোনাকালে মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব বেড়েছে। ইউনিয়নে নেশা জাতীয় উপদ্রব বাজারে বিভিন্ন মোড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সভায় উপজেলার শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রাজীব আহমেদ বক্তব্যে বলেন, ২৬ মার্চ লকডাউন হওয়ার পর অদ্য পযর্ন্ত মাদকের বিরুদ্ধে কোন অভিযান হয় নাই। তিনি আরো বলেন, বিজয়নগর উপজেলা হতে অবাধে তাঁর এলাকায় মদ আসছে। মাদকের বিরুদ্ধে শাহবাজপুরে যৌথ অভিযান পরিচালনা করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান আগের মতোই রয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ওসি এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন, অভিযান আগেই মতোই চলছে। বেশকিছু বড় বড় চালান ইতোমধ্যে ধরা হয়েছে। হাইওয়ে রোড এলাকায় বিভিন্ন মানুষের দেহ তল্লাশি করার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হচ্ছে। কারণ এই সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। তবে পুলিশ সদস্যরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তল্লাশি করছে। অন্য অপরাধ কমলেও মাদক কারবারি গ্রেপ্তারের ঘটনা নিয়মিতই ঘটেছে।।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা বলেন, সরাইলে এখন মাদকসেবীদের দৌরত্ব বেড়েছে। করোনাকালে পরিবারের পক্ষ থেকে মাদকের অভিযোগগুলো আসছে। করোনাভাইরাস সময়ে বাইরে মাদক সেবীরা সুবিধা করতে না পেরে মা- বাবা, ভাই- বোন, স্ত্রী বা পরিবারের ওপর অত্যাচার করছে। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। তবে আমরা খবর পেলে মাদকসেবীদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজার ব্যবস্থা করি।