মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য কবে খুলবে তা নিয়ে আবার অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রোববার ঢাকায় দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তা স্থগিত করেছে মালয়েশিয়া। কী কারণে বৈঠক স্থগিত হলো, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কিংবা মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। মালয়েশিয়ার ঢাকাস্থ হাইকমিশন জানিয়েছে, কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতেই সময় নেওয়া হচ্ছে। শিগগির বৈঠক হবে। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বৈঠকের সম্ভাব্য তারিখ জানাতে পারেনি।
গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলা সেগারেনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রবাসী কল্যালমন্ত্রী ইমরান আহমদ। মন্ত্রীর বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, অভিবাসন ব্যয় কমাতে দুই দেশ একমত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের দেশ ছাড়ার আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। অধিক সংখ্যায় রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারবে। দুই দেশের মধ্যে যেসব আলোচনা হয়েছে, তা চূড়ান্ত করতে ২৪ ও ২৫ নভেম্বর জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে।
দেশে ফিরে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, প্রায় সব বিষয় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষায় 'সেভিং স্কিম' গঠনের বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে দুই দেশের। মালয়েশিয়ার প্রস্তাব কর্মীদের বেতনের ২০ শতাংশ এ স্কিমে জমা থাকবে। তারা দেশে ফেরার সময় এ টাকা ফেরত পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে বেতনের সাড়ে চার শতাংশ জমা করবেন কর্মীরা। এ নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচনা হওয়র কথা ছিল। হঠাৎ করেই বৈঠকটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে প্রবাসী কল্যাণ সচিব মো. সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা স্পষ্ট করে জানাননি ঠিক কী কারণে বৈঠক স্থগিত হলো।
মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের নিয়ন্ত্রণ পেতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট চেষ্টা করছে। মালয়েশিয়ার সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেনদরবার করছে। এ কারণে বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি যৌথ ব্যবস্থাপনায় (জিটুজি প্লাস) ২০১৭ ও ১৮ সালে প্রায় পৌনে তিন লাখ কর্মী মালয়েশিয়া গিয়েছেন। সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা হলেও কর্মী প্রতি সাড়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত নেয় এজেন্সিগুলো। যারা সিন্ডিকেট হিসেবে পরিচিত পায়। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জিটুজি প্লাস বাতিল করে মালয়েশিয়া। গত সেপ্টেম্বর থেকে দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশিদের জন্য।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।