কুড়িগ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন এক কাঠুরিয়া। বৃহস্পতিবার বিকেলে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে বলে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মহিবুল ইসলাম খান নিশ্চিত করেছেন।ভুক্তভোগী ওই কাঠুরিয়ার নাম আলাউদ্দিন (৫০)। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই কাঠুরিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি হাতিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ডারারপার উচার ভিটা গ্রামের বাসিন্দা।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সারাদিন কাজ করে বিকেলে বাসায় ফিরছিলেন আলাউদ্দিন। এসময় তার কাঁধে গাছ কাটার করাত এবং মোটা রশি ছিল। পথে হাতিয়া ইউনিয়নের চৌমোহনী বাজার সংলগ্ন পল্লী উন্নয়ন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সামনে স্কুলের এক শিশু শিক্ষার্থী তার কাঁধে থাকা করাত ধরে টান দিলে প্রচণ্ড ব্যাথা পান আলাউদ্দিন। পরে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার জন্য স্কুল প্রাঙ্গনে প্রাঙ্গনে প্রবেশ করলে তাকে দেখে ওই শিশুটি ‘মাথা কাটা’ বলে চিৎকার দেয়।
শিশুটির এমন চিৎকারে ছুটে আসেন স্কুলের শিক্ষকসহ কয়েকজন। তারা এসে কাঠুরিয়া আলাউদ্দিনের কোনো কথা না শুনেই তারই কাঁধে থাকা রশি দিয়ে গাছের সাথে তাকে বেঁধে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করেন। এসময় আলাউদ্দিন বারবার নিজের পরিচয় দিলেও কোনো শিক্ষক কিংবা অন্য কেউ তাতে কর্ণপাত করেননি। এক পর্যায়ে তারা সাইকেলের চেইন দিয়ে তাকে পেটানো শুরু করে। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসে ভুক্তভোগী কাঠুরিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।ভুক্তভোগীর ছেলে আমিনুল ইসলাম বলেন, "আমার বাবাকে ওই এলাকায় সবাই চেনে। এরপরও স্কুলের শিক্ষকরা কেন এমনভাবে বাবাকে মারলেন সেটা আমি বুঝতে পারছি না।"এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের এসপি মো. মহিবুল ইসলাম খান বলেন, "এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটকত করা হয়েছে, বাকিদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। জড়িত সকল ব্যাক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে।"
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।