‘মা’ একটি এক অক্ষরের শব্দ। অথচ এই শব্দের ব্যাপ্তি যে কতটা বিশাল তা একমাত্র সন্তানরাই জানে। সন্তানের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য মা-ই পৃথিবীর সব কিছু ত্যাগ করতে পারেন। নিজের জীবনের বিনিময়ে সন্তানের জীবন বাঁচিয়েছেন এমন নজির রয়েছে। আর এই রকমই বিরল এক দৃষ্টান্ত গড়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার এক মা। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ছেলেকে বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে ছুটে গিয়েছেন সংযুক্ত আরব-আমিরাতে।এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বড়লেখার পাখিয়ালা গ্রামের প্রবাসী ফখর উদ্দিনের স্ত্রী সালেহা বেগম (৪৪)। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি হাসপাতালে মায়ের দেওয়া কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেলাল আহমদ (২৮) প্রায় ৬ বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যান। সেখানে তিনি তার বাবার সাথে থাকেন। বেলাল সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিডনি ডায়ালাইসিস করেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি চিকিৎসকরা বেলালকে জানান তার দুটো কিডনি একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার মা সালেহা বেগম। এই অবস্থায় নিজের কথা চিন্তা না করে একটি কিডনি ছেলেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেলের কিডনির সাথে মিলে যাওয়ায় সম্প্রতি সালেহা বেগম সংযুক্ত আরব-আমিরাতে যান। পরে গত বুধবার (১৯ জুন) আমিরাতে আবুধাবি শেখ খলিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মায়ের দেওয়া একটি কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন।আমিরাত প্রবাসী বেলালের মামাতো ভাই মুহিবুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মুঠোফোনে জানান, বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এই জন্য বেলালের মা তাকে একটি কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বেলালকে কিডনি দিতে তিনি কয়েক মাস আগে দেশ থেকে এখানে এসেছেন তিনি। পরে বুধবার সন্ধ্যায় আরব-আমিরাতের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে বেলালের দেহে কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। মা ও ছেলে দুইজনে সুস্থ আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।