
‘মা’ কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেনো ভাই, মায়ের চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’-হ্যাঁ, সত্যিই তাই। মাত্র একটি অক্ষরের শব্দ ‘মা’। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ এটি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দ এটি। অর্থে অনবদ্য। শ্রুতিতেও মধুময়। মা ডাক শুনলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়াবী সুন্দর এক মুখ। যে মুখে লেগে থাকে স্নেহ, মমতা আর ভালোবাসা। ‘মা’ শব্দের মধ্যেই পৃথিবীর সব ভালোবাসা, আবেগের সম্মিলন। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় তার ‘মা’। পৃথিবীর সব মানুষের মনে রয়েছে মায়ের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। কেননা সম্পর্কের বেড়াজাল ছিন্ন করে সবাই দূরে সরে যেতে পারে। চলে যেতে পারে প্রেমাবেগের বন্ধনের প্রিয়সীও। কিন্তু ‘মা’র স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন কখনই ছিন্ন হওয়ার নয়। ‘মা’ এমন একজন, যিনি সারাজীবন সন্তানকে বুকের মধ্যে আগলে রাখেন।
আজ বিশ্ব ‘মা’ দিবস। দিনটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে মাকে ভালোবাসা জানিয়েছেন বহু মানুষ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে দিনটি পালন করা হয়। নরওয়েতে- মার্চের চতুর্থ রোববার, আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাজ্যে মা দিবস পালিত হয় ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার। তবে বাংলাদেশে মা দিবস নির্ধারণ করা হয়েছে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। বিশ্বের অনেক দেশে কেক কেটে মা দিবস উদযাপন করা হয়।
যদিও মায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে বর্তমানে সারা বিশ্বে ঘটা করে পালন করা হয় ‘মাদার্স ডে’ বা ‘মা দিবস’। তবে অনেক আগে এটি ছিল নিছক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আধুনিক কালে আমেরিকায় প্রথম ধর্মনিরপেক্ষভাবে দিনটি পালন শুরু হয়। আমেরিকার ছোট এক শহরে এর সূত্রপাত হলেও সেখান থেকে ধারণাটি জনপ্রিয় হয়ে সারা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর পর ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। আধুনিক কালে আমেরিকা থেকে আইডিয়াটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও এর উৎস প্রাচীন মিসর। সেখানে এর চল শুরু হয়েছিল ধর্মীয় আচারের অংশ হিসেবে। যদিও এ বিষয়ে মতান্তর রয়েছে।
আবার মা দিবস বা মাতৃ দিবস হল একটি সম্মান প্রদর্শন জনক অনুষ্ঠান। যা মায়ের সন্মানে এবং মাতৃত্ব, মাতৃক ঋণপত্র, এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবের জন্য উদযাপন করা হয়। এটি বিশ্বের অনেক অঞ্চলে বিভিন্ন দিনে, সাধারণত মার্চ, এপ্রিল বা মে উদযাপন করা হয়। এটি বাবা দিবসের অনুপূরক, যা পিতার সম্মান প্রদর্শন জনক অনুষ্ঠান। বিশ্বের সর্বত্র মায়ের এবং মাতৃত্বের অনুষ্ঠান উদযাপন করতে দেখা যায়। এ গুলোর অনেকই প্রাচীন উৎসবের সামান্য প্রামাণিক সাক্ষ্য, যেমন, সিবেল গ্রিক ধর্মানুষ্ঠান, হিলারিয়ার রোমান উত্সব যা গ্রিকের সিবেল থেকে আসে, অথবা সিবেল এবং হিলারিয়া থেকে আসা খ্রিস্টান মাদারিং সানডে অনুষ্ঠান উদযাপন। কিন্তু, আধুনিক ছুটির দিন হল একটি আমেরিকান উদ্ভাবন যা সরাসরি সেই সব অনুষ্ঠান থেকে আসেনি। তা সত্ত্বেও, কিছু দেশসমূহে মা দিবস সেই সব পুরোনো ঐতিহ্যের সমার্থক হয়ে গেছে।
ছুটির দিনটি ক্রমে এত বেশি বাণিজ্যিক হয়ে পড়ে যে এটির স্রষ্টা আনা জার্ভিস এটিকে একটি "হলমার্ক হলিডে" অর্থাৎ যে দিনটির বাণিজ্যিক প্রয়োজনীয়তা অভিভূত করার মতো, সেই রকম একটি দিন হিসাবে বিবেচিত করেন। তিনি শেষে নিজেরই প্রবর্তিত ছুটির দিনটির নিজেই বিরোধিতা করা শুরু করেন।
ইতিহাস

ইনিউজ ৭১/এম.আর