ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে শিবিরের সন্ত্রাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২১শে এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২১ অপরাহ্ন
ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে শিবিরের সন্ত্রাসী

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নবগঠিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন শিবিরের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত মামুনুর রশিদ। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের সদস্যরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। ছাত্রলীগে সদ্য পদ পাওয়া শিবিরকর্মী নাশকতার কয়েকটি মামলার আসামি। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে তার পরিচিতিও ছিল। রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ তিনি পেয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ। এরপর এপ্রিলে উপজেলা ছাত্রলীগের পরিশ্রমী নেতা ফয়সাল আলমকে সভাপতি ও মাসুম ভূইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছর মেয়াদি ১১ সদস্যর নতুন কমিটির অনুমোদন দেন তারা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল স্বাক্ষরিত কমিটিতে উপজেলা ছাত্রলীগের অচেনা মুখ মামুনুর রশিদকে প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

পরে জানা যায়, উপজেলার গুতিয়াবো এলাকার মামুনুর রশিদ রূপগঞ্জে জন্ম হলেও বেড়ে ওঠা ছিল শহরের ফতুল্লা এলাকায়। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় কোরআনে হাফেজ ও আলিম পাস করা মামুনুর রশিদ ছাত্রজীবন থেকে শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত। শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাছির উল্ল্যাহ ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের বিশ্বস্ত হাতিয়ার বলে পরিচিত মামুনুর। সে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ওসিকে পিটিয়ে আহত, ফতুল্লার পিলকুনি এলাকায় যুবদলের সভামঞ্চে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ, ওয়ারল্যাস লুটসহ পুলিশের এসআই রবি চরন চৌহানকে হত্যার চেষ্টা, বন্দরের ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবঙ্গ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বিভিন্ন মামলার নথিপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে।

২০১২ সালের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ ফতুল্লার পোস্ট অফিস এলাকা থেকে পুলিশ তাকেসহ ৭ জনকে আটক করে। শিবিরকর্মী হিসেবে নাশকতার ঘটনায় মামুনুরের নামে ৪ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। যোগাযোগ করা হলে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে মামুনুর রশিদ বলেন, আমি একজন কোরআনে হাফেজ। মাদ্রাসা ছাত্র ছিলাম বলেই পুলিশ ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতাম, এখনো করছি।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, রূপগঞ্জের কমিটি সেখানকার নীতিনির্ধারকদের পছন্দ অনুসারে করা হয়েছে। আর আমি যতটুকু জেনেছি ছেলেটা ফতুল্লা থানা শেখ রাসেল সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাই তাকে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে। ‘তারপরও তার মামলার কাগজপত্র দেখে সাংগঠনিক নিয়ম অনুসারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব