ভূমি দস্যুদের চক্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাকিবুল ইসলাম তনু, জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: বুধবার ১৬ই জানুয়ারী ২০১৯ ০৬:৪১ অপরাহ্ন
ভূমি দস্যুদের চক্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

ভূমিদস্যুদের চক্রান্তে জমির দখল নিতে পারছেনা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। পুলিশ প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে জমির দখল বুঝে পেলেও এখনো অব্যাহত রয়েছে জীবনাশের হুমকি। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া নানা প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে দখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে ভূমি দখলদার প্রতারক এ চক্রটি। এমনই অভিযোগ কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের বাদুরতলী গ্রামের ভূক্তোভোগী মুক্তযোদ্ধা ডা. হাবিব উল্লাহর পরিবারের।  অভিযোগে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের বাদুরতলী মৌজায় ২১১, ২১২, ২১৩, ২১৪ ও ১৩১ নং দাগে মুক্তিযোদ্ধা ডা. হাবিব উল্লাহর ২৭ শতাংশ জমি রয়েছে। তার মৃত্যুর পর ওয়ারিশ সূত্রে ওই সম্পত্তির মালিকানা পায় স্ত্রী জাকিয়া হাবিবসহ তিন সন্তান। চাকুরীর কারনে পরিবারের সবাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করার সুযোগ নিয়ে ভূমি দখলদার প্রতারক চক্রের সাথে যোগ সাজশে ওই এলাকার আসমা বেগম ও তার স্বামী শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মরহুম ডা. হাবিব উল্লাহর জমি থেকে মাটি কেটে নেয়াসহ নানা কৌশলে ভোগ দখলের পায়তারা করেছে। 

সর্বশেষ শনিবার (১২ জানুয়ারী) থানা পুলিশের অনুমতি নিয়ে দখলীয় জমিতে কাটা তারের বেড়া নির্মান করতে গেলে বাধাসহ হুমকীর মুখে পরেন ডা. হাবিব উল্লাহর স্ত্রী জাকিয়া হাবিব এবং কণ্যা নাদিয়া আফরিন। কলাপাড়া থানায় পাল্টা মৌখিক অভিযোগে করে আসমা বেগম এবং তার স্বামী শহিদুল ইসলাম দাবী করেন, সংশ্লিস্ট পক্ষের কাছ থেকে জমি বিক্রয়ের হাত বায়না চুক্তি রয়েছে তাদের। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিস্ট থানায় জাকিয়া হাবিব গং এবং অভিযুক্ত আসমা বেগমকে কাগজপত্র পর্যালোচনাসহ আপোষ মিমাংসার জন্য তলব করা হয়। এদিন জাকিয়া হাবিব থানায় উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন আসমা বেগম ও শহিদুল। অভিযোগে জাকিয়া হাবিব আরো জানান, তিনি আসমা বেগমের সাথে জমি বিক্রয়ের বায়না চুক্তি করেননি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসমা বেগমের কাছে জমি ক্রয়ের হাত বায়না চুক্তির কাগজপত্র বার বার দেখতে চাইলেও সে তা দেখাতে পারেনি। কৌশলী আসমা ও শহীদুল বায়নাচুক্তি মুলে জমির মালিকানা দাবী করে রবিবার (১৩ জানুয়ারী) একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছে।

সেখানে দাবিকৃত জমির তথ্য অনুযায়ী পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের বাদুরতলী মৌজার ৭ নং জে এল এর দাগ নম্বর ১২১, ১১২, ১১১, ১১৩, ১১৪, ১১৫ উল্লেখ করেছে। যা সম্পূর্ণ ভূল এবং মিথ্যা। তাদের দাবীকৃত জমি এ দাগই নাই। আসমা বেগম এবং তার স্বামী শহীদুল ইসলামমহ ভূমি দখলদারদের মূল হোতা ও মদদদাতাদের চিহ্নিত করে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে জাকিয়া হাবিব বলেন, আমার স্বামী মরহুম হাবিব উল্লাহ ১৯৭১ সালে কমান্ডার মেজর রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন এক নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুক্তিবার্তায় তার যোদ্ধা নম্বর ০৬০৩০১০১০৫ এবং গেজেট নম্বর পটুয়াখালী- ১৪৫। আথচ আজ তার পরিবার এবং ওয়ারিশরা আজ পৈত্রিক সম্পত্তির দখলের জন্য নানমুখী ষড়যন্ত্রসহ প্রভাবশঅলী ও ভ’মিদস্যুদের চক্রান্তে হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আসমা বেগমের সাথে বার বার যোগাযোগের চেস্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নুরুজ্জামান জানান, জাকিয়া হাবিবের ভাই শামীম বিশ্বাস জমি বিক্রয়ের জন্য টাকা নিয়েছে এমন দাবী আসমা বেগমের। কিন্তু দাবীর স্বপক্ষে আসমার কোন কাগজ নাই। উভয় পক্ষকে ওসি স্যার ডেকেছিলেন। কিন্তু আসমা বেগম আসেনি। ফলে বিষয়টি এখনো অমিমাংসিত রয়েছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব