রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) এই বৈঠকে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকেরা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো সাম্প্রতিক ভূমিকম্প পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, “আমরা হাত গুটিয়ে রাখতে চাই না, আবার অবৈজ্ঞানিক কোনো পদক্ষেপও নিতে চাই না। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শগুলো দ্রুত লিখিত আকারে আমাদের দিন; সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং একাধিক টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে কাজ চলছে। পরামর্শ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কারণে আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। তবে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজব, যেমন—৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বা ১ মাসের মধ্যে বড় ভূমিকম্প হবে—এর মতো অপতথ্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে বলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হবার সম্ভাবনা কম, কারণ আমরা স্বল্প ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।” অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আখতার বলেন, তরুণদের কাজে লাগিয়ে ইনডোর, আউটডোর, ব্যক্তি পর্যায় ও প্রতিষ্ঠানে চার স্তরে ন্যাচারাল হ্যাজার্ড প্ল্যান তৈরি করতে হবে।
চুয়েটের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেন, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ—এসব খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এমআইএসটি’র অধ্যাপক মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে সম্পদের মধ্যে থেকেই করণীয় বাস্তবায়ন করতে হবে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী জানান, সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফাটল ধরা ভবনের ছবি সংগ্রহ ও মূল্যায়ন চলছে। ইতোমধ্যেই দুই শটির বেশি ভবনের ফাটল ধরা হয়েছে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের লিখিত সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। টাস্কফোর্সে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকবেন।