প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২৭
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন, মাতারবাড়ী ও মহেশখালী ৩০ বছরের মধ্যে চীনের সাংহাই বা সিঙ্গাপুরের মতো উন্নতমানের বন্দর ও বাণিজ্যিক হাব হিসেবে গড়ে উঠবে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে।
প্রকল্পটি তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম ধাপ ২০২৫ থেকে ২০৩০, দ্বিতীয় ধাপ ২০৩০ থেকে ২০৪৫ এবং তৃতীয় ধাপ ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ পর্যন্ত। বিডা ও মিডার মাধ্যমে ৩৩ হাজার একর জমিতে এই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। প্রশাসনিক কার্যক্রম আগামী ১২০ দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
আশিক চৌধুরী বলেন, মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে কেবল গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে নয়, বরং একটি নতুন শহর ও ব্লু ইকনোমি গড়ে তোলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি তৈরি করা হবে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ ও সহযোগিতা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানের ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হবে, যা সমুদ্র জগতের গবেষণাকে এগিয়ে নেবে।
প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার অর্থনীতি ও শিল্প উন্নয়ন হবে। আশিক চৌধুরী জানান, ৩০ বছরের পরিকল্পনায় প্রথম পাঁচ বছরকে বিকাশকাল বলা হয়েছে। এই সময়ে ফাউন্ডেশন ও সড়ক সংযোগের কাজ শেষ হবে। পরবর্তী পর্যায়ে পরিবেশ উন্নয়ন, বন্দর ও শিল্প কারখানার কাজ সম্পন্ন হবে। চূড়ান্ত দশ বছরে পর্যটন ও শহরতলির উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
প্রকল্পটি চারটি পিলারের ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে। এই চারটি পিলার হলো গভীর সমুদ্রবন্দর ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, সুবিধা প্রদান কেন্দ্র, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, এবং সামুদ্রিক মাছ ধরার কেন্দ্র। আশিক চৌধুরী জানান, এই পিলারগুলো সমন্বয় করে মাতারবাড়ী-মহেশখালীতে আধুনিক ও বহুমুখী অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, মাতারবাড়ী শহর দেশের জিডিপিতে প্রায় দেড়শ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে। এটি কেবল একটি বন্দর নয়, বরং বাণিজ্যিক হাব ও নতুন শহরের রূপ দেবে।
বিডা চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান থাকবে।
মাতারবাড়ী-মহেশখালী অঞ্চলে এই উদ্যোগ শুধু বাণিজ্যিক নয়, বরং পরিবেশ ও ইকো-ট্যুরিজমের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে আধুনিক বন্দরের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।