নির্বাচনী ইতিহাসে অপরাজেয় খালেদা জিয়া

দরজায় কড়া নাড়ছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ফেনী-১, বগুড়া-৭ ও দিনাজপুর-৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তবে নির্বাচনী মাঠে নামার আগেই মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। এতে করে বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির এক অনন্য অধ্যায় অসমাপ্ত রয়ে গেল।

খালেদা জিয়া ছিলেন দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে অন্যতম সফল ও অপরাজেয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনোই কোনো সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের মুখ দেখেননি। দেশের যে প্রান্তেই নির্বাচন করেছেন, সেখানেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি।

১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১—এই তিনটি নির্বাচনে তিনি পাঁচটি করে আসনে প্রার্থী হয়ে সবকটিতেই বিজয় লাভ করেন। নির্বাচনে একাধিক আসনে দাঁড়িয়ে প্রতিবারই নিরঙ্কুশ সাফল্য তার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার প্রমাণ বহন করে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তিনটিতেই জয়ী হন। ওই নির্বাচনে বিএনপি সামগ্রিকভাবে ভরাডুবির মুখে পড়লেও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নির্বাচনী ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়েনি।

পরবর্তীতে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি। মামলার জটিলতায় ২০১৮ সালের নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেননি খালেদা জিয়া। ওই নির্বাচনেও তিনি ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আবারও নির্বাচনী মাঠে ফেরার আলোচনা চলছিল। তবে তার মৃত্যুতে সেই প্রত্যাবর্তন আর বাস্তবায়িত হলো না। রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার এই অনুপস্থিতি নির্বাচনী ইতিহাসে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি করল।