প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৩
বাংলাদেশের ব্যাংকখাতে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপশাসনের কারণে দেশের অর্থনীতি প্রবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকরা এর প্রভাব অনুভব করছেন। এক বছরের মধ্যে নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংকখাত সংস্কারে কাজ শুরু করেন এবং এর ফলে ব্যাংকগুলোর ভয়াবহ বাস্তবতা সামনে আসে।
বর্তমানে চিহ্নিত এক ডজন দুর্বল ব্যাংকের মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল, ইউনিয়ন, সোশ্যাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়ন পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। এসব ব্যাংকের খেলাপির হার ৯৬ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। এসব ব্যাংক একীভূত করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। গভর্নর জানান, আগামী সপ্তাহে সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এছাড়া অন্তত ২০টিরও বেশি ব্যাংক রয়েছে, যাদের ওপরও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে সরকারি ব্যাংকও রয়েছে। বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষত, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার বিক্রির চেষ্টা চলছে। শেয়ার বিক্রি সফল হলে, প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ওই ব্যাংকের আর্থিক ঘাটতি পূরণ করা হবে।
সরকার দুর্বল ব্যাংক বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে না বরং এগুলো টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকখাতকে আরও শক্তিশালী করতে তাদের সার্বিক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যাংকগুলোর শুদ্ধতা ও স্বচ্ছতা অপরিহার্য। এ জন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
বর্তমান পদক্ষেপগুলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা দূরীকরণে এ উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ে ব্যাংকখাতের অপশাসন ও দুর্নীতি নির্মূলে করণীয় পদক্ষেপগুলো নিয়মিত নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।