প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ২৩:৪৯
টোকিও, জাপান – জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বাংলাদেশকে ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রবাসীরাই মূল ভূমিকা পালন করেছেন।”
আজ টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “এটাই সত্য যে কঠিন সময়ে দেশের যে টিকে থাকা—তা সম্ভব হয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে।”
অধ্যাপক ইউনূস অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও ব্যাংক শূন্য করে দিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের সহায়তা না পেলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারত না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্যই তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। তবে দেশের পূর্ণ উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ আরও সক্রিয় ও শক্তিশালী হওয়া দরকার।
প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসীদের বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “একজন নাগরিক হিসেবে আপনাদেরই রাষ্ট্র মেরামতের দায়িত্ব নিতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ থাকায় তাদের বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করা সম্ভব।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সামগ্রিকভাবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে… আপনারা জাপান সরকারের ওপর প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করুন।”
আজ প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৪১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন, ৬৪১ মিলিয়ন ডলারের জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়াল-গেজ ডাবল-লেন রেলওয়ে প্রকল্পের ঋণ এবং ৪.২ মিলিয়ন ডলারের মানবসম্পদ উন্নয়ন স্কলারশিপ অনুদান।
সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী এবং জাপানের পক্ষে দেশটির রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা। এই আনুষ্ঠানিকতা প্রত্যক্ষ করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।