ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে কুরআন বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
রবিউল আলম-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:০৫ পূর্বাহ্ন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে কুরআন বিতরণ

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই হাজার সাধারণ শিক্ষার্থীর মাঝে কুরআন বিতরণ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়াহ সোসাইটি। "Al Quran for Everyone" স্লোগানে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল কুরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ।  


আলোচক হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, কুরআনের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। শৈশবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে কুরআন বুকে নিয়ে মক্তবে যাওয়া ছিল সাধারণ দৃশ্য, কিন্তু আধুনিক যুগে শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তন আমাদের ঐতিহ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাদের সংগঠন ইতোমধ্যে কুরআন ২০টি ভাষায় অনুবাদ করেছে এবং বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো দেশের প্রায় ৮ লাখ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর হাতে কুরআন তুলে দেওয়া।  


সংগঠনটির চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, কুরআন কেবল একটি ধর্মগ্রন্থ নয়, এটি মানুষের জীবনের দিকনির্দেশনা দেয়। তিনি উল্লেখ করেন, কুরআনকে শুধুমাত্র অধ্যয়ন নয়, এর মর্মার্থ বুঝে তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, ইসলামের পূর্ণতা বুঝতে হলে কুরআনকে সঠিকভাবে জানতে হবে।  


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, কুরআন মানব জীবনের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা। তিনি বলেন, এটি কেবল কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য নাজিল হয়েছে। কুরআনের মেসেজ প্রতিটি মানুষের জীবনের সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম।  


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, কুরআনকে বোঝা ছাড়া সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি উল্লেখ করেন, কুরআন মানব সমাজের হেদায়েতের জন্য নাজিল হয়েছে। এটি মানুষের জীবনের লক্ষ ও গন্তব্য নির্ধারণে সাহায্য করে।  


উপাচার্য আরও বলেন, কুরআনের প্রতিটি শব্দ এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে তা সহজে বোঝা যায়। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, জীবনের প্রতিটি সমস্যার সমাধানের জন্য কুরআনের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।  


এই কার্যক্রমে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা কুরআন বিতরণ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তারা কুরআনের শিক্ষাকে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। অনুষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের মাঝে কুরআনের গুরুত্ব এবং তা বোঝার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।  


দাওয়াহ সোসাইটির এই উদ্যোগ ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে কুরআনের মর্মার্থ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সংগঠনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে, যা ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর পরিসরে প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।