বাংলাদেশের দারিদ্র্যের পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২’ প্রতিবেদনে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য বরিশাল বিভাগে, যেখানে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে কম দারিদ্র্য দেখা গেছে, যেখানে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছেন। শহরে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ হলেও গ্রামাঞ্চলে তা ২০ শতাংশেরও বেশি। এর মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ এলাকাগুলির মধ্যে দারিদ্র্য আরো প্রকটভাবে রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য হলো, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলা হিসেবে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে দারিদ্র্যের হার ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে, সবচেয়ে ধনী উপজেলা হিসেবে ঢাকার পল্টন এলাকা চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে দারিদ্র্য মাত্র ১ শতাংশ।
জেলা ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র জেলা হলো মাদারীপুর, যেখানে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। এর বিপরীতে, সবচেয়ে ধনী জেলা হিসেবে নোয়াখালী চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে দারিদ্র্যের হার মাত্র ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
এই পরিসংখ্যান থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, দেশের দারিদ্র্যের চিত্র একেবারে অসমান। বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ব্যাপকভাবে ভিন্ন। যেখানে একদিকে বরিশাল ও মাদারীপুরের মতো অঞ্চলগুলিতে দারিদ্র্যের হার অনেক বেশি, সেখানে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে তা অনেক কম।
এছাড়া, এই রিপোর্টের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, দেশের শহর এবং গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্যের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্যের হার অনেক বেশি, যা বাংলাদেশের দারিদ্র্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
এদিকে, দারিদ্র্য কমানোর জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান থাকলেও, এই ধরনের পরিসংখ্যান একটি বড় সিগন্যাল হিসেবে কাজ করছে যে, বিশেষভাবে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য দূরীকরণে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। দারিদ্র্যের এই চিত্র যে কীভাবে দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে, তা পরবর্তীতে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সরকার এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাগুলোর পরিকল্পনা ও সহায়তা গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।