বাংলাদেশের নারীদের বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্প্রতি কিছু বাধা দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে, যার কারণে অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষত, মেয়েদের ফুটবল ম্যাচ পরিচালনায় যারা বাধা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
৩০ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়, যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে নারীদের অধিকার রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হয়েছে। সরকার বলেছে, নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পুরুষদের মতোই সমান অধিকার ভোগ করে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নারী অধিকার লঙ্ঘন বা বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আওতায় আনা হবে। এভাবে নারীদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের কোনো প্রচেষ্টা মেনে নেয়া হবে না, এবং সরকার তা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
বিবৃতির পর, সরকার দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, যেন তারা স্থগিত করা নারী ফুটবল ম্যাচগুলো পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট ও কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে, যা হাজার হাজার মানুষের উপভোগ্য হয়েছে।
এছাড়াও, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত এক মাসে দেশে বৃহত্তম যুব উৎসবগুলোর আয়োজন করেছে, যার মধ্যে নারী খেলোয়াড়দের জন্য বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। গ্রামীণ এলাকায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছে, যা সকল শ্রেণির মানুষের প্রশংসা অর্জন করেছে।
ড. ইউনূস, যিনি নারী অধিকারের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, গত সপ্তাহে ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে সহায়তা চেয়েছেন।
এর মাধ্যমে সরকার ও ড. ইউনূস নারী খেলাধুলায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং তাদের উন্নয়নে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে নারী খেলোয়াড়দের জন্য আরও অনেক সুযোগ সৃষ্টি করা হবে, যেন তারা নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে।
এদিকে, সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নারীরা এই ধরনের খেলাধুলায় অংশ নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যা সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সরকারের এই পদক্ষেপ নারীদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করছে যে, তাদের অধিকার, সুযোগ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে, এবং কোনো ধরনের বৈষম্য বা বাধা তাদের অগ্রগতির পথে আসতে দেয়া হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।