প্রামাণ্যচিত্রের জেরে ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ১৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:০১ অপরাহ্ন
প্রামাণ্যচিত্রের জেরে ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন হাসিনা

ব্রিটেনের খ্যাতিমান ব্যারিস্টার ডেসমন্ড ব্রাউনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল শেখ হাসিনা সরকার, আল জাজিরার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্দেশ্যে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রামাণ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রচারের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য সানডে টাইমস।


প্রামাণ্যচিত্রটি প্রচার হওয়ার পর, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ডেসমন্ড ব্রাউনের কাছে মানহানির মামলা করার পরামর্শ চেয়েছিলেন। তারা প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে যুক্ত সাংবাদিক, বিশেষ করে ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, শেখ হাসিনার ঢাকার সাবেক বাসার শয়নকক্ষে পাওয়া নথি থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।


ডেসমন্ড ব্রাউন প্রাথমিকভাবে পরামর্শ দিতে সম্মত হলেও, তিনি মামলার পথে অগ্রসর হননি। এরপর ব্রাউন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের যুক্তরাজ্যের আরেক আইনজীবী ক্লার্ক উইলিয়ামসের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তিনি আদালতে প্রামাণ্যচিত্র সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তাব দেন।


প্রামাণ্যচিত্রটির প্রভাব ছিল ব্যাপক। এটি ইউটিউবে এক কোটি বার দেখা হয়েছে এবং পুরস্কারও অর্জন করে। মুক্তির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তার ভাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। পাশাপাশি, ডকুমেন্টারির কাজের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে।


প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার যুক্তরাজ্যে মামলা করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে ইউটিউব ও ফেসবুকে ডকুমেন্টারিটি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। তবে এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ইউটিউব ও ফেসবুক বাংলাদেশের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে।


২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যারিস্টার ব্রাউন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সহায়তা করতে সম্মত হন। তবে শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে মামলা না করায় বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়।


প্রামাণ্যচিত্রটি প্রকাশের পর শেখ হাসিনা সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে। শেষ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে পালিয়ে যান।


ব্যারিস্টার ব্রাউন সানডে টাইমসকে দেওয়া এক মন্তব্যে জানান, তিনি প্রাথমিক বৈঠকে পরামর্শ দিলেও কোনো মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেননি।