পাওনা টাকার বিরোধে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: রবিবার ১৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
পাওনা টাকার বিরোধে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পাওনা টাকা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে মো. আব্দুর রহমান হৃদয় নামে এক কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। নিহত হৃদয় চৌমুহনী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার সওদাগর বাড়ির বাসিন্দা মো. সেলিমের ছেলে। পেশায় তিনি একজন ফার্নিচার মিস্ত্রি ছিলেন।  


শনিবার রাত পৌনে ১২টায় চৌমুহনী পৌর ভূমি অফিসের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতের ছোট ভাই রিফাত জানান, চৌমুহনী পৌরসভার গোলাবাড়ি এলাকার শাহ আলমের ছেলে বাবু কিছুদিন আগে হৃদয়ের বন্ধু আশিকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নেন। টাকা ফেরত চাইলে বাবু তালবাহানা করতে থাকেন। পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে বিষয়টি আশিক বাবুর বড় ভাই রনিকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবু আশিকের বন্ধু হোসেন ও সাগরকে ধরে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করেন।  


রাত সোয়া ১১টার দিকে এ খবর পেয়ে হৃদয় তার কাকা রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে হোসেন ও সাগরকে উদ্ধারে বের হন। চৌমুহনী পৌর ভূমি অফিসের সামনে বাবুর সঙ্গে তাদের দেখা হলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বাবু হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করেন। একই সময়ে রাসেলকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।  


স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করেন। রাসেল অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  


চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খোকন চন্দ্র ঘোষ জানান, নিহত হৃদয়ের মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চালাচ্ছে।  


নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবু পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়ার কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরিবারের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।  


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকায় বাবু আগে থেকেই বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।  


পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততম সময়ে হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ উদঘাটন এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আশাবাদী।  


এ ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হৃদয়ের পরিবার বিচার চেয়েছে এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।