প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৩
স্বৈরাচারী শাসনের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিচার বিভাগ ছিল সরকারের দাসে পরিণত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, "বিচার বিভাগ এবং দুদক তার স্বাধীন কর্তৃত্ব প্রয়োগে অক্ষম ছিল, যার ফলে দুর্নীতির বিকাশ ঘটেছিল এবং সমাজে তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।"
৯ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন ড. আসিফ নজরুল। তিনি আরও বলেন, “দুদক এবং উচ্চ আদালত ছিল, তবে সেখানে বিচার কার্যকর হয়নি। বিশেষত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া হলেও সাধারণ জনগণের দুর্নীতির বিচার কোথাও হয়নি।”
ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের পর, দুদক সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতিবাজরা রাষ্ট্র কাঠামো দখল করে রেখেছিল। এটি নিশ্চিত করে যে, তারা তাদের কার্যক্রম থেকে রেহাই পায় এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতার বিকৃতি ঘটায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া হলে, এ ধরনের পরিস্থিতি আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।"
তিনি বলেন, "দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে সংস্কার কাজ চলছে, তাতে সাঁড়াশি অভিযান ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।"
এদিকে, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন নিয়ে তার মতামত জানান। তিনি বলেন, “যদি আমরা সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারি, তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমাজকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। এটি কেবল প্রতিকারমূলক নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।”
দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, "দেশের উন্নয়নকে বড় বাধা হচ্ছে দুর্নীতি, এবং আমাদের একত্রে লড়াই করে এ বাধাকে দূর করতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "জুলাই মাসের দুর্নীতি বিরোধী চেতনা আমাদের সামনে পথ দেখাচ্ছে, এবং আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।"
এই ধরনের শক্তিশালী বক্তব্য এবং উদ্যোগ দুর্নীতি দমনে জাতিকে আরও একত্রিত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।