পঙ্গু সাত ছাত্রশিবির নেতা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক - আইন আদালত
প্রকাশিত: রবিবার ১৭ই নভেম্বর ২০২৪ ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
পঙ্গু সাত ছাত্রশিবির নেতা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিলেন

গুম, নির্যাতন এবং শারীরিকভাবে পঙ্গু হওয়ার ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সাত নেতাকর্মী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে আলাদা আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এক্ষেত্রে, এক নেতাকর্মী এখনও নিখোঁজ আছেন, যার পক্ষ থেকে তার ভাই অভিযোগ দাখিল করেছেন।


অভিযোগকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক কর্মী মো. জনি ইসলাম, চট্টগ্রাম বাঁশখালী শাখার কর্মী মো. আব্দুল করিম, বগুড়া শেরেপুরের সাবেক কর্মী আলমগীর হোসেন, নোয়াখালীর দেলোয়ার হোসেন মিশু, চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলাম তারেক, গুলশান ভাটারা থানা শাখার সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন এবং ঝিনাইদহের রতনহাট উপজেলার সাবেক সভাপতি মো. কামারুজ্জামান। 


এদের মধ্যে কয়েকজন দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিকভাবে গুরুতর আহত, কয়েকজনের চোখ নষ্ট এবং কিছু নেতাকর্মী চিরকাল পঙ্গু হয়ে গেছেন র‌্যাব ও পুলিশের নির্যাতনের ফলে। অভিযোগকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ড. আমানুল্লাহ আল জিহাদী (আদীব) জানান, ৫৩ জন র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যারা এই অমানবিক ও বর্বোচিত নির্যাতনে জড়িত ছিল। 


অভিযোগকারীরা জানান, তাঁদের ওপর চালানো হয়েছিল অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যার ফলে তারা আজ শারীরিকভাবে অক্ষম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী জনি ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তাকে পা হারাতে হয়েছে, এবং চট্টগ্রামের মো. আব্দুল করিমের পা এবং আলমগীর হোসেনের শরীরের অন্যান্য অংশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নোয়াখালীর দেলোয়ার হোসেন মিশু অভিযোগ করেন, তাকে চোখের আলো হারাতে হয়েছে। 


এই অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে এই নেতাকর্মীরা শুধু নিজেদের জন্য justice চাচ্ছেন না, বরং তাদের মতো যারা অন্যায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্যও বিচার চাচ্ছেন। তাদের দাবি, এই ঘটনার দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, এবং যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো নাগরিক এরকম নির্যাতনের শিকার না হন।


এছাড়া, অভিযোগের মাধ্যমে আরও একটি নেতাকর্মী, যিনি এখনও নিখোঁজ আছেন, তাকে সনাক্ত করে তাঁর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আইনজীবী ড. আমানুল্লাহ আল জিহাদী বলেন, “এই ধরনের জুলুম ও নির্যাতন কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না এবং এর যথাযথ বিচার প্রয়োজন।”


এখন এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উপর নির্ভর করছে যে তারা এই অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেবে। 


---  

**সংবাদদাতা:** দৈনিক ইত্তেফাক, ঢাকা