বহুদিন পর আবারো ২০ বিলিয়নে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৭ই নভেম্বর ২০২৪ ০৬:১০ অপরাহ্ন
বহুদিন পর আবারো ২০ বিলিয়নে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দীর্ঘদিন পর আবারও ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে প্রবাসী আয়ের বৃদ্ধি এই উন্নতির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে, নভেম্বরের ৬ তারিখ পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫.৭৩ বিলিয়ন ডলারে, যা বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী ২০ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে। 


অবশ্য, নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনো ১৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে, যা দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সাধারণভাবে, একটি দেশের জন্য ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন, যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। 


এদিকে, প্রবাসী আয়ের বৃদ্ধি বাংলাদেশের রিজার্ভের বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। চলতি বছরে প্রবাসীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে, গত মাসে অক্টোবর মাসে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, যা গত চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। 


রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও নতুনভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছে। জুলাইয়ে যেখানে রেমিট্যান্স ছিল ১৯০ কোটি ডলার, আগস্টে তা বেড়ে ২২২ কোটি ডলারে পৌঁছায়, এবং সেপ্টেম্বরে এটি ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার ছাড়িয়ে যায়।  


তবে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি দায় পরিশোধ। প্রতি দুই মাস পরপর আকু দায় পরিশোধ করা হলে রিজার্ভ কিছুটা কমে যাবে, তবে এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।  


বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ভবিষ্যতে প্রবাসী আয়ের এই প্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং দেশের রিজার্ভ আরও উন্নত হবে।  


বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং উন্নতির জন্য এক ইতিবাচক সংকেত, তবে এর সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নীতি প্রণয়ন গুরুত্বপূর্ণ হবে যাতে দেশের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।