হাসিনার উচ্চাভিলাষী প্রজেক্ট দোহাজারী থেকে গুনদুম রেললাইন প্রকল্প বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: বুধবার ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
হাসিনার উচ্চাভিলাষী প্রজেক্ট দোহাজারী থেকে গুনদুম রেললাইন প্রকল্প বাতিল

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের ফাস্টট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে ‘দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে গুনদুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্পটি এখন গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনা ও আবেগের বশবর্তী হয়ে নেওয়া এই প্রকল্পটি নতুন করে মূল্যায়ন করতে হচ্ছে। 


রেলপথ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। এর ফলে রামু থেকে গুনদুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের কাজ বাদ দেয়া হচ্ছে, যা ৬ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা সাশ্রয় করবে।


প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায়। তবে নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে মোট ব্যয় ১১ হাজার ৩৫১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় নামানো হচ্ছে, যা ৩৭.০৬ শতাংশ কম।


পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, কক্সবাজার-গুনদুম প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে আগে গভীরভাবে চিন্তা করা হয়নি। মিয়ানমারে পাহাড়ি এলাকা থাকায় সেখানে রেললাইন নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেই। এর ফলে এই প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


এদিকে, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দিতে অস্বীকার করেছে। মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ট্রান্স এশিয়ান রেল সংযোগ স্থাপন আপাতত সম্ভব নয়।


সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ বলেছেন, প্রকল্পটি নেওয়ার সময় পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল না, তবে বর্তমান পরিস্থিতি প্রকল্পের উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি আশাবাদী যে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি ভালো হবে এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা পুনরায় অর্থায়ন করতে রাজি হবে।


সভায় নতুন ৮টি ফুটওভার ব্রিজ, কক্সবাজারের বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের ক্যাপাসিটি উন্নীতকরণ এবং ৪৬টি সড়ক আন্ডারপাস নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এসব কাজের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। 


এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এবং এর সংশোধনীর পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করার জন্য পিইসি সভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যেখানে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি অপরিহার্য হবে।