প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১৬:২২
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, সংঘাত, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত ১১ দিনে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে।
প্রতিনিধিরা দেশের ৫৬টি মহানগর ও জেলার পুলিশ সূত্র থেকে গত ১১ দিনের (১৭-২৭ জুলাই) মোট গ্রেপ্তারের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি জেলায় কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু জেলায় গ্রেপ্তারের আরও তথ্য জানা গেছে। সব মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯ হাজার ১২১ জন। এর আগে গত শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি গ্রেপ্তারের তথ্য ছিল।
কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন ১ জুলাই। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারা দেশে। এর পরদিন থেকে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এখনো বিভিন্ন জায়গায় মামলা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
গতকাল মেট্রোরেলে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। এ ছাড়া রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবনে আগুন ও ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ তিনজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, এখন পর্যন্ত তাঁদের দলের ৩৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা ও অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার সৃষ্ট সন্ত্রাসের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হত্যা-নির্যাতনের পর এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সাজানো মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিরোধী মতের নেতাদের হত্যা, গ্রেপ্তার, গুলি করে আদালতে ওঠানোর আগেই নির্যাতন করে পঙ্গু করা হচ্ছে এবং বিচার বিভাগকে দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে আবারও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।