হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে গিয়ে দাইকুন্দিতে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৪ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে গিয়ে দাইকুন্দিতে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৪ জন নিহত

আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলীয় ঘোর প্রদেশের দাইকুন্দি অঞ্চলে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৪ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক হামলার খবর প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ, যা পরে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন নিশ্চিত করেছে।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত ও আহত ব্যক্তিরা সবাই দাইকুন্দি প্রদেশের বাসিন্দা। তারা হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে, যখন স্থানীয় লোকজন হজযাত্রীদের আগমনে অংশগ্রহণ করছিলেন। এই সময়ে বন্দুকধারীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।


আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আবদুল মতিন কানি এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে, তিনি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য দেননি বা হামলার পেছনে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে তা ব্যাখ্যা করেননি। কানি বলেন, তদন্ত চলছে এবং শিগগিরই বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।


এদিকে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস), যা আফগানিস্তানে আইএসআইএস-খোরাসান (ISIS-K) নামেও পরিচিত, এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিদ্রোহী এই সংগঠনটি ইতিপূর্বেও আফগানিস্তানে বেসামরিক জনগণের ওপর বেশ কয়েকটি আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে। আইএস সাধারণত শিয়া মুসলমানদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়, এবং দাইকুন্দি অঞ্চলে শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা প্রধানত বসবাস করেন।


হামলাটি আফগানিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির ভঙ্গুর অবস্থা প্রকাশ করছে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশটিতে আইএস সহ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও তালেবান সরকার দাবি করছে, তারা আইএসসহ অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, তবে এসব আক্রমণ এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা সাধারণ নাগরিকদের জীবনে চরম অনিশ্চয়তা নিয়ে এসেছে।


দাইকুন্দি অঞ্চলে সংঘটিত এই হামলার পর স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনার ফলে চরম আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।


বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ দেশটিকে আরও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই সঙ্গে, তালেবান সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বাড়ছে, যাতে তারা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।


আইএস-এর এই আক্রমণ দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে শঙ্কা বাড়াচ্ছে।