যমুনা সার কারখানায় ১৩ মাস পর ইউরিয়া উৎপাদন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
শাওন মোল্লা , জেলা প্রতিনিধি- জামালপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
যমুনা সার কারখানায় ১৩ মাস পর ইউরিয়া উৎপাদন শুরু

গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ ১৩ মাস বন্ধ থাকার পর জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডে (যমুনা সার কারখানা) আবারও ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত যমুনা সার কারখানা বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন একটি অত্যাধুনিক সার কারখানা। কারখানাটি দৈনিক ১,৭০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনে সক্ষম। তবে, গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।


দীর্ঘ এই বন্ধের ফলে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়, কারণ ইউরিয়া সারের সংকট তাদের কৃষিকাজে বাধা সৃষ্টি করছিল। বিশেষ করে, বোরো ও আমন ধানের মৌসুমে পর্যাপ্ত সার সরবরাহ না পাওয়ায় কৃষকদের উচ্চমূল্যে সার কিনতে হয়েছে।


কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরিয়া উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে, পুরো উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতে পারে। গ্যাসের চাপ পর্যাপ্ত না থাকায় ধাপে ধাপে উৎপাদন বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।


দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সার উৎপাদন শুরু হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কৃষকরা আশা করছেন, এখন থেকে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পাবেন এবং ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে না।


এক স্থানীয় কৃষক বলেন, "সারের সংকট আমাদের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করেছিল। এখন কারখানাটি চালু হওয়ায় আমরা আশা করছি, সময়মতো ও ন্যায্যমূল্যে সার পাবো।"


যমুনা সার কারখানার উৎপাদন শুরু হওয়ায় শুধু কৃষি খাতই নয়, সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সরকারকে বিদেশ থেকে সার আমদানি করতে হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন শুরু হলে আমদানির প্রয়োজন কমবে, ফলে দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।


তবে, কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যমুনা সার কারখানার মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংকট যেন আর না হয়, সে বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।