হাতিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে স্বামী-স্ত্রীর করুণ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
হাতিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে স্বামী-স্ত্রীর করুণ মৃত্যু

নোয়াখালীর হাতিয়ায় রান্নাঘরের চুলা থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালি গ্রামের বাসিন্দা নিমাই চন্দ্র মজুমদার ও তার স্ত্রী মিলন বালা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুন লেগে তাদের ঘরসহ পাশের গোয়াল ঘরেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দম্পতির শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।  


স্থানীয়রা জানান, রাতে খাবার খেয়ে নিমাই ও তার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে আকস্মিক রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়লে তা গোয়াল ঘরেও লাগে এবং ৪টি গরু আগুনে পুড়ে মারা যায়। দগ্ধ অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  


ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছানোর আগেই বিকেল ৫টার দিকে নিমাই চন্দ্র মজুমদার মারা যান। এরপর তার স্ত্রী মিলন বালাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  


ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের গভীরে আগুন লাগার সময় তারা দ্রুত কিছুই বুঝতে পারেননি। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই ঘর পুড়ে যায়। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা নিমাই ও তার স্ত্রী মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন।  


এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। নিহত দম্পতি রান্নাঘরের পাশেই একটি কক্ষে থাকতেন, সম্ভবত চুলার আগুন থেকে দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।  


হাতিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি তাদের জানানো হয়নি। তবে তারা এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন এবং দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন।  


স্থানীয়রা জানান, হাতিয়ার অনেক বাড়িতে এখনো সনাতন পদ্ধতির চুলা ব্যবহার করা হয়, যা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি থেকে যায়। তারা এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।  


এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত দম্পতির পরিবারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।