প্রাইভেট টিউটরের সাথে স্ত্রীর পরকীয়া, স্বামীর আত্মহত্যা

স্ত্রীর পরকীয়া সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। তার নাম প্রতাব কুমার সাহা (৩৮)। পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের দোরাজপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত প্রতাব কুমার সাহা পেশায় মোটরসাইকেল মেকার ছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে।

স্থানীয়রা জানান, মোহনপুর উপজেলার দোরাজপাড়া গ্রামের মৃত মন্দ্রিনাথ সাহার ছেলে প্রতাব কুমার সাহার সাথে রংপুর জেলার পীরগঞ্জের দীলিপ কুমার সাহার মেয়ে তাপসি রানী সাহার প্রায় ৬ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পাশের নওনগর গ্রামের আতাউর কাজীর ছেলে হাফিজ নামের এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র প্রতাব কুমার সাহার ছেলে প্রান্ত কুমার সাহাকে বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। এক পর্যায়ে প্রাইভেট শিক্ষকের সাথে নিহত প্রতাব কুমার সাহার স্ত্রী পরকীয়ার জড়িয়ে পড়েন।

পরে তাপসির স্বামী স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে ৫ বছরের একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুনরায় স্ত্রীকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু বাড়িতে ফিরেও স্ত্রীর পরকীয়া বন্ধ হয়নি। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় প্রতাব কুমার সাহার মনে।

এ ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। বুধবার রাত ১১টায় সময় স্বামী-স্ত্রী ও পাঁচ বছরের ছেলে প্রান্ত কুমার সাহাকে নিয়ে প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার দিবাগত রাতে পাশের রুমে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে প্রতাব কুমার সাহা। নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানান পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন প্রতাব কুমার সাহার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

এদিকে স্ত্রীর পরকীয়ায় স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নিহত প্রতাব কুমার সাহার স্ত্রী তাপসি রানী সাহা পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় প্রাইভেট শিক্ষক হাফিজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রতাব কুমারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই সুজল কুমার সাহা বাদী হয়ে থানায় ইউডি মামলা দায়ের করেছেন।