প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১৫
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টে ঘোষণা শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রায় ঘোষণা শুরু হয়।
গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। আজকের রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, এবং ইন্টারভেনর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
এ মামলায় ২৩ এপ্রিল চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি গত ২০ এপ্রিল নতুন বেঞ্চ গঠন করেন। এর আগে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে চলছিল। কিন্তু ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় বেঞ্চ ভেঙে যায় এবং নতুন বেঞ্চে রায় ঘোষণার জন্য পুনর্গঠন করা হয়।
রিটটি ২৫ আগস্ট দায়ের করা হয়। ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে রিটে বলা হয়, মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হোক। হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, বিদ্যমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।
বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে বলা হয়েছিল, বিচারকর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
বিদ্যমান সংবিধানের অনুযায়ী বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি, ছুটি ও শৃঙ্খলাবিধিতে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব রয়েছে। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রিটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র বা নির্বাহী বিভাগের হাতে রাখা হলে বিচার বিভাগের স্বতন্ত্রতা হুমকির মুখে পড়ে। এই রায় দেশের বিচার ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
আজকের রায় ঘোষণার মাধ্যমে ১১৬ অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদী বিতর্কের সমাধান হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শৃঙ্খলা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ভবিষ্যত রূপরেখা নির্ধারণ করবে।