প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০
রোববার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে একাধিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে হাজির করা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ১৪ জনকে, যাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে।
একই দিনে কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগার থেকে সাবেক এনটিএমসি পরিচালক জিয়াউল আহসানসহ ১০ জনকে আদালতে তোলা হয়। অন্যদিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ ১৫ জন এবং নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এসব অভিযুক্তদের মধ্যে সালমান এফ রহমান, জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ মোট ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য রয়েছেন।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মুগ্ধ হত্যা মামলা এবং নরসিংদী, কক্সবাজার, সিলেটসহ সাতটি পৃথক হত্যা মামলায় রোববার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং এক পর্যায়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, এসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ভূমিকা ছিল সক্রিয়, এবং বহু ক্ষেত্রে তারা সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন বা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তবে এখনো তদন্ত শেষ না হওয়ায় প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে যাতে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়।
আসামিদের আদালতে উপস্থিতি ঘিরে আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল জোরদার। প্রত্যেক আসামিকে পৃথকভাবে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুসারে হাজির করা হয় এবং শুনানির জন্য বিভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার পক্ষ আশাবাদী, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এই ঘটনাগুলো দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে যুক্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের এভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে সবকিছু নির্ভর করছে তদন্ত কতটা নিরপেক্ষ ও প্রমাণভিত্তিকভাবে সম্পন্ন হয় তার ওপর।