প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ২১:২
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন আদালতে চলমান কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তার মতে, এসব মামলার শিকার হাজার হাজার নাগরিক এই উদ্যোগের ফলে ন্যায়বিচার ও সম্মান ফিরে পাবেন। রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে প্রায় ১২ হাজার মামলার বিরুদ্ধে সুপারিশ করা হয়েছে যা অন্তত তিন লাখ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি এখন পর্যন্ত ১৬টি বৈঠক করে ১১ হাজার ৪৪৮টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে। এইসব মামলা মূলত বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও এসব মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রত্যাহারযোগ্য মামলাগুলোর একটি প্রাথমিক তালিকা জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং সলিসিটর শাখা থেকে সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে মামলার তালিকার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যেমন এফআইআর ও চার্জশিট সরবরাহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রক্রিয়াটি বিলম্ব না হয়।
বিএনপি চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার মামলার তালিকা জমা দিয়েছে, অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ১ হাজার ২০০টি মামলা চিহ্নিত করে এপ্রিলের মধ্যে পাঠিয়েছে। তবে আইন উপদেষ্টা অভিযোগ করেছেন যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই মামলাগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করা হয়নি, যা প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশও ২০ মে ৪৪টি মামলার তালিকা জমা দিয়েছে। এগুলোর নথি পর্যালোচনা করে দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। সরকার এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে একটি সুবিচারভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের পথে এগোচ্ছে।
মন্ত্রণালয় পুনরায় রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা দ্রুত সংশ্লিষ্ট মামলার বিস্তারিত নথিপত্র প্রেরণ করে প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে একটি দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা রাজনৈতিক সংকটের নিরসন সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।