প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৪৫
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে মঙ্গলবার এই রায় দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ।
এটি বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা, কারণ এই প্রথমবারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন অভিযুক্ত আপিল বিভাগের রায়ে সম্পূর্ণ খালাস পেলেন। রায় ঘোষণার পর তার আইনজীবীরা জানান, এখন আর আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে কোনো বাধা নেই।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এই রায়ের জন্য সবার আগে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া জানাই। আদালত আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এটি ছিল ন্যায়বিচারের বিজয় এবং মিথ্যা অভিযোগের পরাজয়।
তিনি আরও বলেন, এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এটি ছিল বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি প্রচেষ্টা। এই রায় একটি ঐতিহাসিক নজির হয়ে থাকবে, যা ভবিষ্যতের বিচারপ্রক্রিয়ায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি আপিল করেন এবং ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে, একই বছরের ১৯ জুলাই রিভিউ আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম। এরপর ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির পর আপিল বিভাগ রিভিউ মঞ্জুর করে এবং পুনরায় আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এই মামলাটি রিভিউ পর্যায়ে গিয়ে পুনরায় আপিলের সুযোগ পাওয়া প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হিসেবে আইনি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। বিচারকরা সব দিক বিবেচনা করে অভিযোগের যথাযথ ভিত্তি না পাওয়ায় তাকে খালাস দেন।
২০১২ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার মগবাজার থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই আজহারুল ইসলাম কারাগারে ছিলেন। এবার তার মুক্তির পথ পুরোপুরি উন্মুক্ত হলো আপিল বিভাগের সর্বশেষ রায়ের মাধ্যমে।