বৃষ্টির অভাবে শ্রীমঙ্গলে বোরো চাষে বিপর্যয়, হতাশ কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২০শে মার্চ ২০২৫ ০৩:৩১ অপরাহ্ন
বৃষ্টির অভাবে শ্রীমঙ্গলে বোরো চাষে বিপর্যয়, হতাশ কৃষক

শ্রীমঙ্গলে চলতি বোরো ধানের জমিতে পানির অভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে এবং রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে ধানের চারা। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা বর্তমানে শঙ্কিত। চাষের জন্য জমি তৈরি করতে গিয়ে কৃষকরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং বৃষ্টির অভাবে তারা তাদের আশা হারিয়ে ফেলেছেন। এতে কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।


এ অঞ্চলের কৃষকরা জানাচ্ছেন, মাঘ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় তারা সময়মতো জমিতে বোরো রোপণ করতে পারেননি। সেচ পদ্ধতিতেও তেমন পানি পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে এবং বোরো ধানের চারাগুলো রোদে পুড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, অন্যান্য খরচ যেমন শ্রমিকের মজুরি, তেলের দাম বৃদ্ধি, সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকের আর্থিক চাপ আরও বেড়ে গেছে।


স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, জমির খরা পরিস্থিতির কারণে তারা খরচ বাড়লেও ভালো ফলনের আশা করছেন না। আশিদ্রোন ইউনিয়নের শংকরসেনা গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তার ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে যাচ্ছে এবং তিনি ফলনের বিষয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় আছেন। সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামের কৃষক ফখর উদ্দিন জানান, তিনি ৪ একর জমিতে বোরো চাষ করেছেন, তবে বৃষ্টির অভাবে ফসল এখন হুমকির মুখে।


শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এই বছর বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমি। তবে সেচ সুবিধার অভাবে অনেক জমি বোরো চাষের আওতায় আসেনি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শ্রীমঙ্গলে ১১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে, তবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জমির পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। সেচ সংকটের কারণে উৎপাদনে কিছুটা তারতম্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


কৃষকরা বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছেন, তবে এ অবস্থায় তাদের জমি রক্ষার সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গলে বোরো ধানের ফলন নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।