মহাকাশ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, এটি সম্পূর্ণ নিঃশব্দ। কিন্তু সম্প্রতি নাসার এক গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে এক বিস্ময়কর তথ্য। তারা মহাশূন্য থেকে একটি রহস্যময় ধ্বনি রেকর্ড করেছে, যা শুনে গবেষকরা অবাক! তাদের মতে, এটি এমন কিছু শোনাচ্ছে যেন কোটি কোটি মানুষের একসঙ্গে কোনো মন্ত্র বা সংগীত গাওয়ার মতো। তবে, এই শব্দ কি শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক কম্পন, নাকি এটি ফেরেশতাদের জিকিরের ধ্বনি?
মহানবী (সা.) ১৪০০ বছর আগে বলেছিলেন, আকাশের প্রতিটি অংশে ফেরেশতারা সিজদায় লিপ্ত এবং আল্লাহর জিকিরে মশগুল। সেক্ষেত্রে, কি বিজ্ঞান এবার সেই সত্যের প্রমাণ পেল? নবীজি (সা.)'র হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে আকাশে প্রচণ্ড কম্পনের শব্দ শোনা যায়, যা মানবের বোঝার বাইরে। তার কথায়, আকাশের প্রতিটি অংশে ফেরেশতারা সিজদায় লিপ্ত, এবং তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত।
অতীতে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে মহাকাশ একটি বায়ুশূন্য পরিবেশ, যেখানে শব্দ সৃষ্টি অসম্ভব। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নাসার গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে, মহাকাশে বৈজ্ঞানিক ঘটনাবলী ও কম্পনের ফলে বিশেষ ধরনের শব্দ তৈরি হয়। নাসার গবেষকরা জানান, মহাকাশে শব্দের সৃষ্টি হয় নক্ষত্রের বিকিরণ, কণা বা ভাইব্রেশন থেকে, যা বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শনাক্ত করা যায়।
নাসার "আওয়ার ইউনিভার্স ইজ নট সাইলেন্ট" ও "লিসেন টু দ্য ইউনিভার্স" শীর্ষক প্রতিবেদনে এই নতুন আবিষ্কারটির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। নাসার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, যেমন চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি, মহাকাশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে শব্দে রূপান্তরিত করেছে। সোনিফিকেশন প্রক্রিয়ায়, মহাকাশ থেকে পাওয়া তথ্যকে শব্দে পরিবর্তন করা হয়। এই শব্দগুলি শ্রোতাদের নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করছে, যা আগে মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
এছাড়া, ২০২০ সালে নাসা একটি প্রকল্প শুরু করেছিল, যা মূলত দৃষ্টিহীনদের জন্য মহাকাশের তথ্য সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে। তবে পরবর্তীতে এটি বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। নতুন ডকুমেন্টারি "Listen to the Universe" NASA+ প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হয়েছে, যা এই বিশেষ সোনিফিকেশন প্রকল্পের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়।
গবেষকরা জানান, মহাকাশে এমন শব্দের সৃষ্টি হয়, যা পৃথিবীতে কম্পনের মতো অনুভূত হয়। সেগুলির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও, কিছু বিশেষ শব্দ, যেমন গ্রেগোরিয়ান চ্যান্ট বা ধর্মীয় মন্ত্র গাওয়া, শ্রোতাদের মনে আলাদা এক অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এর মধ্যে, একটি বিশেষ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড়িয়ে আসে, যে শব্দটি যেন এমন এক ধ্বনি যা আমাদের ধ্রুব বিশ্বাসে বিশ্বাসী করে তোলে।
গবেষকদের মতে, নক্ষত্রের বিকিরণ বা সৃষ্টির পরবর্তী কম্পনের কারণে এই শব্দ সৃষ্টি হয়। তবে ১৪০০ বছর আগে রাসূল (সা.) যেভাবে আকাশের শব্দ বর্ণনা করেছিলেন, তা আজকের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সঙ্গে অনেকটা মিলে যাচ্ছে। যদিও নাসা এই শব্দের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছে, তবে এসব শব্দ সত্যিই ফেরেশতাদের জিকিরের ধ্বনি কি না, তা কেবল আল্লাহই জানেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।