মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় কৃষি পণ্য উৎপাদনে সুনাম থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার হিড়িক অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশ আইনে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী প্রতিনিয়ত কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে, যার কারণে পরিবেশ, কৃষি এবং জনস্বাস্থ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এ ধরনের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় কৃষি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া ভারী ট্রাকের চলাচল কারণে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও ব্রিজেরও ক্ষতি হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার বেশিরভাগ জমিই তিন ফসলি এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়। কিন্তু মাটি কাটার কারণে জমির শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে নালা বা জলকড়া জমিতে পরিণত হচ্ছে। কৃষকরা অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে জমির এক থেকে দেড় ফুট মাটি বিক্রি করতে সম্মত হন, তবে এর ফলে জমির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের (বাপা) সদস্য আ.স.ম. সালেহ সোহেল জানান, মাটির টপ সয়েল কেটে ফেলার কারণে দীর্ঘমেয়াদে কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এটি শুধু কৃষকদের জন্যই নয়, বরং পুরো এলাকার পরিবেশের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন বলেন, “কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর ফলে কৃষকরা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়বেন এবং ফলনও কমে যাবে। এই ক্ষতি ২০ বছরেও পূরণ হবে না।” তিনি জানান, যদি এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়বে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষা করা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।