নওগাঁয় পেট্রোল পাম্প বন্ধ, ভোগান্তিতে চালকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
নওগাঁয় পেট্রোল পাম্প বন্ধ, ভোগান্তিতে চালকরা

নওগাঁয় বিনা নোটিশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বুধবার সকাল ৮টা থেকে সংগঠনের সদস্যরা জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখেছেন, এতে যানবাহন চালকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে চালকদের। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা বিপাকে পড়েছেন, অনেকে অফিসগামী হওয়ায় পথে তেল শেষ হয়ে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন।  


নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে মেসার্স সাকিব ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, জ্বালানি নিতে আসা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনের চালকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সিম কোম্পানির কর্মী আল-আমিন বলেন, সকালে অফিসে যাওয়ার পথে তেল শেষ হয়ে যায়, বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল ঠেলে পাম্পে নিয়ে আসলেও তেল না পেয়ে আবার ঠেলে নিতে হয়েছে। তার মতো অনেকেই এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।  


অনিক মাহমুদ নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, সারা দিন মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন কাজে যেতে হয়, কিন্তু তেল না পাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিয়ে ধর্মঘট করার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।  


বগুড়ার আদমদীঘিতে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ উচ্ছেদ অভিযান চালায়। সান্তাহার-বগুড়া মহাসড়কের হামিম ফিলিং স্টেশন ও আনিকা ফিলিং স্টেশনের তেলের মিটার সরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, কর্তৃপক্ষ কোনো পূর্বঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই এ অভিযান পরিচালনা করেছে, যা পাম্প মালিকদের ক্ষুব্ধ করেছে।  


এই আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিষ্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্সস এসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রেখে ধর্মঘটে নেমেছে। এতে শুধু নওগাঁ নয়, আশপাশের জেলাগুলোর যানবাহন চালকরাও বিপাকে পড়েছেন।  


ধর্মঘটের ফলে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। চালকরা দ্রুত সমস্যার সমাধান চান, যাতে জ্বালানি সংকট কাটিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।  


পেট্রোল পাম্প মালিকরা বলছেন, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তারা বলছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে ধর্মঘট চলবে।  


এদিকে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, যেসব পাম্প অবৈধভাবে স্থাপিত হয়েছে, সেগুলো অপসারণ করতেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।