লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও থানার ওসিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জন্য নারী প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে দায়ী করে তার গ্রেপ্তারের দাবিতে স্থানীয়রা থানা ঘেরাও করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ থানার সামনে এই ঘটনা ঘটে। দুপুর থেকে তামান্না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা ও কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মহাসড়কে বসে আন্দোলন করছিলেন। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতা ও এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন্নবীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ঘিরে ধরে এবং ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়, ফলে তারা থানায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে বিক্ষোভকারীরা থানার সামনে অবস্থান নেয় এবং তামান্নার গ্রেপ্তারের দাবি তোলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তামান্না দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি ও মানহানি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি, তবে আজকের ঘটনার পর সবাই একত্র হয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন্নবী জানান, তিনি জেলা সদর থেকে ফিরছিলেন, তখন কালীগঞ্জ থানার সামনে যানজট দেখে সেখানে গাড়ি নিয়ে গেলে হঠাৎ হামলার শিকার হন। বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ভাঙচুর করে এবং তাকে আক্রমণের চেষ্টা করে। তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, সম্প্রতি তামান্না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সমালোচনা করছিলেন, যা প্রশাসনের নজরে এসেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। রাত পর্যন্ত থানা ঘেরাও অব্যাহত থাকলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।