https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

বরিশালে তীব্র লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে ৮ লাখ গ্রাহক

Ziaul Hoque
জিয়াউল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০:৪২

শেয়ার করুনঃ
বরিশালে তীব্র লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে ৮ লাখ গ্রাহক

বরিশালে ভ্যাপসা গরম আর বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ৮ লক্ষাধিক গ্রাহককে। এতে করে সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তারা বলছেন, ইদানিং বাড়তি বিল আসছে ঠিকই, কিন্তু বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই না থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, বরিশালে বুধবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ৩০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাতাসে আদ্রতা রয়েছে ৮১ শতাংশ। 

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ ও ২ এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) ডিভিশন ১ ও ২ এ মোট ৮ লাখ ১১ হাজার গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২৫৫ মেঘাওয়াট। আর গত ২/৩দিন যাবত সাপ্লাই পাচ্ছে ১৮৫ মেঘাওয়াটের কিছু কম/বেশি। ফলে বিপুল এ গ্রাহক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এ কারণে শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। 

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

সূত্রমতে, বরিশাল ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ডিভিশন-১ এ ৭০ হাজার গ্রাহকের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮০ মেঘাওয়াট। আর ডিভিশন-২ এ ৬৬ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩৫ মেঘাওয়াট। কিন্তু প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সাপ্লাই না থাকায় শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে বলে দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের। তবে গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল সিটি এলাকায় গত ২/৩ দিন যাবত দিন-রাত মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ বার ঘন্টাব্যাপী লোডশেডিং করা হচ্ছে। 

ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হলে তার প্রভাব সারাদেশেই পড়ে, যেমনটা বরিশালেও পড়ছে। তবে তার দাবি, গরমের সময় এতটুকু লোডশেডিং স্বাভাবিক। কেননা এ সময়টাতে বিদ্যুতের ব্যবহারও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। 

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

আর ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বরিশালে চাহিদার তুলনায় গ্রিড থেকে সাপ্লাই না থাকায় এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে তা খুবই সামান্য।

এদিকে বরিশালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৬ লাখ ৭৫ হাজার গ্রাহকের ১৪০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে গত ২/৩দিন যাবত সাপ্লাই ১০৫ মেঘাওয়াট থাকায় সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১-২ ঘন্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের দাবি, প্রতিদিন তিন থেকে চারবার কখনো ১ ঘন্টা আবার কখনো দুই ঘন্টা লোডশেডিং পাচ্ছেন তারা। 

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সমিতি-১ এর আওতায় ৩ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহকের চাহিদা রয়েছে ৭০ মেঘাওয়াট। আর এ চাহিদার বিপরীতে গত দু’তিন দিন যাবত সাপ্লাই পাচ্ছেন ৪৫ মেঘাওয়াট। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনে ও রাতে সর্বোচ্চ ১-২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। 

বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) মো. সাদেকুর রহমান জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতায় গ্রাহক সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজার। যাদের চাহিদা রয়েছে ৭০ মেঘাওয়াট। তবে গ্রিড থেকে সাপ্লাই পাওয়া যাচ্ছে ৬০ মেঘাওয়াট। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে বিভিন্ন এলাকায় দিনরাত মিলিয়ে এক থেকে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এটা সহনীয় পর্যায়ের মধ্যে পড়ে।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ভোলা ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ভোলায় একটি প্লান্ট বন্ধ থাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ সাপ্লাই কম রয়েছে। তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে এসিসহ বিদ্যুৎ ব্যবহার আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে, এর ফলে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, কিন্তু চাহিদার বিপরীতে অন্তত ২০ ভাগ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল বলেন, বরিশালে তাপমাত্রা কম থাকলেও বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। তবে শনিবার থেকে বরিশালে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

https://enews71.com/storage/ads/01JR36BQSKCPE69WB8Z3TARXE3.jpg

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

https://enews71.com/storage/ads/01JR3CX28Y9BM01PRE4TXCNDWF.jpg

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

নিরাপদ পানির লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে বাবুগঞ্জ

নিরাপদ পানির লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে বাবুগঞ্জ

জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নিরাপদ ও সুপেয় পানির সংকট দিনদিন তীব্রতর হচ্ছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলাও এই সংকটের বাইরে নয়। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না, কিছু নলকূপে কখনো পানি ওঠে, কখনো আবার ওঠে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ অকেজো নলকূপ অগভীরভাবে স্থাপন করা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে

শ্রীমঙ্গলে বন্ধ সিজার অপারেশন, দুর্ভোগে প্রসূতি মায়েরা

শ্রীমঙ্গলে বন্ধ সিজার অপারেশন, দুর্ভোগে প্রসূতি মায়েরা

মৌলভীবাজার জেলার চা-বাগান অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে এ হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রসূতিরা। সরকারি হাসপাতালে সিজার অপারেশন বন্ধ থাকায় শত শত প্রসূতিকে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে, যা অতিরিক্ত ব্যয়বহুল এবং অনেকের সামর্থ্যের বাইরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে

মনু নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ভরসা ২২ হাজার মানুষের !

মনু নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ভরসা ২২ হাজার মানুষের !

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাজিরবাজারে প্রমত্তা মনু নদীর ওপর একটি সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন আশপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের প্রায় ২২ হাজার মানুষ। বর্ষায় উত্তাল নদীতে নৌকায় পারাপার এবং শুষ্ক মৌসুমে সরু বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজিরবাজার এলাকায় মনু নদীর ওপর এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত একটি বাঁশের সাঁকোই ভরসা। এ

সলঙ্গাবাসীর গলার কাঁটা নবনির্মিত ব্রীজ, বাড়ছে ঝুঁকি

সলঙ্গাবাসীর গলার কাঁটা নবনির্মিত ব্রীজ, বাড়ছে ঝুঁকি

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় তাড়াশ-সলঙ্গা জিসি রাস্তার বনবাড়িয়ায় নবনির্মিত দুটি ব্রীজ এখন স্থানীয়দের জন্য বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রীজের কাজ চলছিল, তবে শেষ পর্যন্ত উভয় ব্রীজের পাশে মাত্রাতিরিক্ত ঢালু থাকার কারণে যানবাহন ওঠানামা করতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যাত্রীদের এবং মালামাল পরিবহনকারী যানবাহনের চলাচলে ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। ইঞ্জিন চালিত যানবাহন ব্রীজে উঠতে গিয়ে মাঝপথে থেমে যায়,

আজমিরীগঞ্জে পানির সংকট: জনগণের দুর্ভোগ চরমে

আজমিরীগঞ্জে পানির সংকট: জনগণের দুর্ভোগ চরমে

তীব্র তাপদাহে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় পানির সংকট বেড়ে গেছে। দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলার অধিকাংশ সাধারণ পাম্প ও টিউব ওয়েল থেকে পানি উঠছে না। এ কারণে উপজেলার মানুষের মধ্যে সুপেয় পানির জন্য চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। খাল-নালা এবং বেশিরভাগ পুকুর ও জলাশয়ের ভরাট হওয়ায় পানি সংকটের সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, দাবদাহ, বৃষ্টি না হওয়া, পুকুর