বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাস ইস্যুতে চীনের পক্ষে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অর্থ সাহায্য স্থগিত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন স্থগিত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে প্রতিক্রিয়ায় তাদের 'প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ' হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চীনে ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর জাতিসংঘের এই সংস্থাটির অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করার পাশাপাশি তারা সত্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। এর আগে তিনি বলেছিলেন যে সংস্থাটি প্রতি চীনের পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে।জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন যে, এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়ন কমানোর সঠিক সময় নয়। খবর বিবিসির।মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নিজের দেশের করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব সামলানোর বিষয়টি নিয়ে সমালোচিত হলেও হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।'
এককভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিলে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ৪০ কোটি ডলার- যা ছিল সংস্থাটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে সেখানে চীনের অবদান ছিল ৭.৬ কোটি ডলার এবং স্বপ্রনোদিত অনুদান ১ কোটি ডলার।বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার লক্ষ্যে মার্চ মাসে সাড়ে ৬৭ কোটি ডলারের আবেদন করেছে তারা এবং আরো ১০০ কোটি ডলারের আবেদন করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
চীনের উহানে যখন করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হলো, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর গুরুত্ব সঠিকভাবে অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, 'ডব্লিউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) যদি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে চীনের পরিস্থিতি যাচাই করতো এবং চীনের অস্বচ্ছতা প্রকাশ করে দিতো, তাহলে প্রাদুর্ভাব উৎসতেই নিয়ন্ত্রণ করা যেতো, মৃত্যুও অনেক কম হতো। তা না করে ডব্লিউএইচও চীনের সরকারের কার্যক্রমকে সমর্থন দিয়েছে।'এসময় সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেন যে, তিনি নিজেই কিছুদিন আগে ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চীনের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
হোয়াইট হাউজে সংবাদ সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান যে যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন তুলে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ঘোষণা করার পরিকল্পনা 'প্রায় চূড়ান্ত' হয়েছে।সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন মন্তব্য করেন যে অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নররা না চাইলেও তিনি লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তখন তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রশাসনের দায়িত্ব রাজ্যের গভর্নরদের।
ইনিউজ ৭১/ জি.হা
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।