ওমানের সুলতান মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ১১ই জানুয়ারী ২০২০ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
ওমানের সুলতান মারা গেছেন

ওমানের শাসক সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদ মারা গেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ৭৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান বলে শনিবার ভোরে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে। তার মৃত্যুতে দেশটিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ৪০ দিন পর্যন্ত অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নতুন সুলতানের মনোনয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ পরিবার। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি’র। 

১৯৭০ সালে সুলতান কাবুস বৃটিশদের সহযোগিতায় তার নিজ পিতাকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে এক রক্তপাতহীন বিপ্লবের মাধ্যমে ওমানের সালতানাত দখল করে নেন। তারপর ওমানের তেল সম্পদকে কাজে লাগিয়ে তিনি দেশটির উন্নয়নে নিরলস কাজ করে গেছেন। তিনি অকৃতদার ছিলেন, তাই ওমান সালতানাত এখন তার কোনো উত্তরাধিকারের হাতে যাচ্ছে না। আগামী তিনদিনের মধ্যে রাজ পরিবারের ৫০ পুরুষ সদস্য আলোচনার মাধ্যমে নতুন সুলতান কে হবেন তা খুঁজে বের করবেন। ততদিন পর্যন্ত ওমানের সুলতানের পদ ফাঁকা থাকবে। নিকটাত্মীয় হিসেবে আছেন তার চাচাত ভাইয়েরা। ফলে তার উত্তরাধিকারী কে হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তবে ২০১১ সালে উত্তরাধিকার নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় সংশোধনী আনেন কাবুস। এতে বলা হয়েছে, রাজপরিবারে কোনও বিরোধ দেখা দিলে সুলতানের নিয়োগকৃত শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার একটি কাউন্সিল নতুন সুলতান নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হবেন। যদি রাজ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা তা খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হন তাহলে ওমানের প্রতিরক্ষা কাউন্সিল, পরামর্শক কাউন্সিল ও স্টেট কাউন্সিলের সদস্যরা মিলে সুপ্রিমকোর্টের সভাপতির উপস্থিতিতে একটি সিল করা ইনভেলাপ খুলবেন, যেখানে সুলতান কাবুস গোপনে তার উত্তরাধিকারীর নাম লিখে রেখে গেছেন।

জার্মানি ও বেলজিয়ামে চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি রাজধানী মাস্কটে ফেরেন সুলতান কাবুস বিন সাইদ। অসুস্থতার বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া না হলেও ধারণা করা হয়ে থাকে তিনি কোলন ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, ওমানের নতুন সুলতান হবে রাজ পরিবারের সদস্য। তাকে অবশ্যই মুসলমান, প্রাপ্তবয়স্ক, যৌক্তিক এবং ওমানের মুসলমান বাবা-মায়ের পুত্র হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব শর্ত পূরণ করতে পারা ৮০ জনেরও বেশি পুরুষ রয়েছে। তবে ৬৫ বছর বয়সী আসাদ বিন তারিকই নতুন সুলতান হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে আসাদকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে সুলতান কাবুসের নিকটাত্মীয়দের সমর্থনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়।

তবে শেষ পর্যন্ত ওমানের আইন অনুযায়ী রাজ পরিবার যদি নতুন সুলতান মনোনয়নে সম্মত হতে ব্যর্থ হয় তাহলে কাবুসের লিখে রেখে যাওয়া দুটি সিল করা চিঠিতে যে ব্যক্তির নাম থাকবে তিনিই শাসকের দায়িত্ব পাবেন।

ইনিউজ ৭১/এম.আর