অ্যামাজনের আগুন নেভাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চাইল ব্রাজিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ৩১শে আগস্ট ২০১৯ ০৬:০৪ অপরাহ্ন
অ্যামাজনের আগুন নেভাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চাইল ব্রাজিল

অ্যামাজন বনে জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো। এ বিষয়ে কথা বলতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বলসোনারোর প্রতিনিধিরা। একই বিষয়ে ফোনালাপের কথা রয়েছে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সাথেও। তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ক্ষমা না চাইলে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো তার সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনা করবেন না বলে আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে, এ বছরই অ্যামাজনে রেকর্ড সংখ্যকবার আগুন লেগেছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রচার করা হলেও এ তথ্য সত্য নয় বলে দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

বাড়ির পাশেই জ্বলছে আগুন। জ্বলছে বাড়ির উঠান। জমির ফসল পুড়ে গেছে দাবানলে। এতে এক রকম অনাহারেই দিন কাটছে তাদের। আর নতুন ফসল চাষেরও উপায় করতে পারছেন না তারা। তাই ভবিষ্যতও অনিশ্চিত এখানকার বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে, জমি পরিষ্কার করতে অ্যামাজন বনে আগুন লাগানোয় ব্রাজিল সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এক কৃষক বলেন, ফসলি জমি বের করার জন্য আগুন দেয়াই আমাদের কাছে সবচেয়ে সহজ আর দ্রুততম উপায়। কিন্তু এবার ফসল সব পুড়ে গেছে দাবানলে। দুই সপ্তাহ থেকে আমাদের পরিবার খাবারের চরম সংকটে আছে। আরেকজন বলেন, আমরা চাষের জন্য আগুন দিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করি। কিন্তু এতে কোন ক্ষতি হয় না। হয়তো আগুন বেশিদূর ছড়িয়ে যায়। কিন্তু বনে আগুন লাগা তো খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। দুইমাস চাষ না করলে খাবো কি?

অ্যামাজনের আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইতে শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর ছেলে এডওয়ার্ডো বলসোনারো ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নেস্টো আরাউজো। হোয়াইট হাউজে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, অ্যামাজনের বিষয়টি নিয়ে ব্রাজিল সরকার ও মার্কিন সরকার একই ধরণের মনোভাব পোষণ করছে। বিষয়টি নিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গেও ফোনে আলাপ করার কথা রয়েছে। তবে, সংকট নিরসনে অন্য সব দেশের দেশের সহায়তা নিলেও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ক্ষমা প্রার্থনা না করা পর্যন্ত দেশটির সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনায় যাবেন না বলে আবারও জানান জেইর বলসোনারো।

জেইর বলসোনারো বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা অ্যামাজনের দাবানল নিয়ে আমাদের মতোই উদ্বিগ্ন। দেশগুলো আমাদের সহায়তা করতেও প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু ম্যাঁক্রো অ্যামাজনের ওপর ব্রাজিলের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেন না। এর জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা না করা পর্যন্ত ফ্রান্সের সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনায় যাবো না আমরা। এদিকে, অ্যামাজন বন পুড়ে যে ভয়াবহ কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে, শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য তা মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে শ্বাস প্রশ্বাস জনিত অসুখের পূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ সংস্থাটির।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব