প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৮
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
গাজা উপত্যকায় চলমান অস্থিরতার মধ্যে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, গাজায় যদি হামাস আবারও হত্যাযজ্ঞ চালায়, তাহলে তাদের ‘নির্মূল করতে বাধ্য’ হবেন। বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
গত দুই বছর ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষে অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টন, যা মিশরের ১৩টি পিরামিডের সমান। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অগণিত মৃতদেহ ও অবিস্ফোরিত বোমা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। ফলে যুদ্ধবিরতির পরও এলাকাজুড়ে মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে।
গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি গাজায় কিছুটা স্বস্তি আনলেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধ হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের নতুন হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের চোখে নতুন কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্পের পোস্টে বলা হয়েছে, “যদি হামাস গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়ে যায়, যা চুক্তির অংশ ছিল না, তবে আমাদের সেখানে গিয়ে তাদের নির্মূল করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।” তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ করেননি, যা এই বক্তব্যকে আরও বিতর্কিত করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, তার এই মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন হামাসের প্রতি কঠোর অবস্থান নিলেও, চলমান যুদ্ধবিরতির পর এমন হুমকি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এটি ইসরায়েলকেও পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করতে পারে, যা গাজার জন্য নতুন বিপর্যয় ডেকে আনবে। অন্যদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, এই ধরনের বক্তব্য পুনরায় সংঘর্ষ উস্কে দিতে পারে।
গাজার জনগণ ইতিমধ্যে চরম মানবিক সংকটে ভুগছে। হাসপাতালগুলো ওষুধের অভাবে কার্যত অচল, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, গাজার পুনর্গঠনে বিশাল অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন হবে।
বিশ্ব সম্প্রদায় এখন তাকিয়ে আছে, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবেই কোনো সামরিক পদক্ষেপে যায় কি না। কারণ ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি শুধু হামাসের জন্য নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার দিকেও সরাসরি ইঙ্গিত দেয়। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।