প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৪
ফ্রান্সের সাংবিধানিক কাউন্সিল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসী আটক রাখার আইন বাতিল করেছে, যা কাউকে ২১০ দিন পর্যন্ত আটক রাখার সুযোগ দেয়। এই বিধানকে সংবিধানের পরিপন্থী ঘোষণা করে আদালত আটকের সর্বোচ্চ সময়সীমা ৯০ দিনেই সীমাবদ্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষা পাচ্ছে।
ফ্রান্সে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি বসবাস করে, যাদের মধ্যে অনেকেই অনিয়মিত অবস্থায় রয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদি আটক বাড়ানোর প্রস্তাবের কারণে কমিউনিটিতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে আইনের এই বাতিলের পর তারা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে।
২০২৪ সালে ফ্রান্সে প্রায় ৪০ হাজার অভিবাসী প্রশাসনিক আটক কেন্দ্রে ছিল। দীর্ঘমেয়াদি আটক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিতর্কিত। সাংবিধানিক কাউন্সিল স্পষ্ট বলেছেন, কাউকে এমনভাবে আটক রাখা যাবে না যা তার মর্যাদা ও স্বাধীনতা হরণ করে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো কঠোর আইন প্রণয়নের পক্ষে ছিলেন। ২০২৪ সালের প্যারিসের এক শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘদিন আটক থাকার পরও অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশত্যাগ করতে পারেননি, যা আইন কঠোর করার কারণ হিসেবে কাজ করেছিল।
মানবাধিকার সংগঠন লা সিমাদ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল ফানেলি কারে-কন্তে বলেছেন, ‘এই রায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইন প্রণেতাদের জন্য সতর্কবার্তা, কারণ আইন মানুষকে স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।’
অন্যদিকে কিছু রাজনৈতিক নেতা এই রায়কে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করেন। তাদের দাবি, ফ্রান্সের প্রতিবেশী দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি আটক রাখার বিধান রয়েছে যা জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
সাংবিধানিক কাউন্সিলের রায়ে স্পষ্ট হয়েছে, অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও আটক রাখার সময়সীমা ন্যায্য ও সীমিত হতে হবে। এটি ফ্রান্সের অভিবাসী নীতিতে নতুন দিক নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ফ্রান্সে এই রায় মানবাধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রকাশ করেছে, যা আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রশংসিত হতে পারে। আগামী দিনে অভিবাসী আইন আরও উন্নত ও মানবিক হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।