প্রকাশ: ৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১৩
সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিমান ধ্বংস করেছে সুদানের বিমান বাহিনী। বুধবার গভীর রাতে দারফুরের নিয়ালা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিমানটিতে বোমা হামলা চালানো হয়। সুদান সেনাবাহিনী (এসএএফ) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে জানা যায়, হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কলম্বিয়ার একদল ভাড়াটে সৈন্যও ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুদানের দারফুর অঞ্চলটি বর্তমানে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আরএসএফের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিয়ালা বিমানবন্দরকে বহুবার টার্গেট করেছে সুদানের সেনাবাহিনী।
এক সামরিক সূত্র এএফপিকে জানায়, আমিরাতের বিমানটি উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি ঘাঁটি থেকে উড়ে এসে আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত এই বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করছিল। এ সময় সুদান বিমান বাহিনী বোমা হামলা চালিয়ে সেটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে। বিমানটিতে কয়েক ডজন বিদেশি যোদ্ধা এবং সামরিক সরঞ্জাম ছিল বলে দাবি সেনাবাহিনীর।
তবে এ বিষয়ে আমিরাত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু স্বীকার করেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আমিরাতি কর্মকর্তা বলেন, সুদানের সেনাবাহিনী মিথ্যা অভিযোগ করছে। আরএসএফের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণা ল্যাবের প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, দক্ষিণ দারফুরের রাজধানীর বিমানবন্দরে একাধিক চীনা তৈরি দূরপাল্লার ড্রোন রয়েছে। এ তথ্য সুদানের সেনাবাহিনীর অভিযোগের পক্ষে নতুন করে জোরালো আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেছেন, তার সরকার হামলায় নিহত কলম্বিয়ানদের সংখ্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এবং তাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা যাচাই করছে।
গত সোমবারই সুদানের সেনাসমর্থিত সরকার আমিরাতের বিরুদ্ধে আরএসএফের হয়ে লড়াই করার জন্য কলম্বিয়ান ভাড়াটে যোদ্ধা নিয়োগ ও অর্থায়নের অভিযোগ করেছিল। এমনকি এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে বলেও দাবি করে।
২০২৪ সালের শেষ দিকে দারফুরে কলম্বিয়ান ভাড়াটে যোদ্ধাদের উপস্থিতি শুরু হয় বলে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। বর্তমানে তারা অঞ্চলের বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। এই হামলা দারফুরের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।