প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ২১:১৫
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত গাজা উপত্যকায় আবারও তীব্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেড। গত তিন দিনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। যুদ্ধবিরতির বারবার ভাঙন ও সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি এখন গাজার প্রতিদিনকার বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার উত্তর গাজার তুফাহ এলাকায় একটি ইসরায়েলি সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে হামলা চালায় আল কাসাম ব্রিগেড। রকেট হামলায় ঘটনাস্থলেই ৭ জন সেনা নিহত হয় এবং বাকি ১০ জন গুরুতর আহত হন। এতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সামরিক সক্ষমতায় বড় ধরনের ধাক্কা লাগে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সির সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার গাজার শহর এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে আরও এক সেনা প্রাণ হারান। একইসঙ্গে রকেট হামলায় দু’টি মেরকাভা ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান ও একটি বুলডোজার ধ্বংস করে আল কাসাম যোদ্ধারা, যা ইসরায়েলি বাহিনীর উপর সরাসরি আঘাত হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে চালানো হামলায় আরও ৭ জন সেনা নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার কর্মকর্তা ছিলেন, যিনি এলিট ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এই হামলাগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর মনোবলে স্পষ্ট প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল আবারও পূর্ণমাত্রায় গাজা অভিযানে নামার পর এত কম সময়ে এ ধরনের বড় ক্ষতি এবারই প্রথম ঘটল। এতে বোঝা যাচ্ছে, হামাসের প্রতিরোধ শক্তি এখনো পূর্ণমাত্রায় সক্রিয় ও সক্ষম।
এই হতাহতের পর গাজার বেসামরিক জনগণের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হামলা ও প্রতিহিংসার এই বৃত্তে আর কতদিন সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকবে, সেই প্রশ্ন এখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মুখে মুখে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারাবাহিক সংঘর্ষ শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যুদ্ধের নেপথ্যে রাজনীতি যতই থাকুক, ভুক্তভোগী থেকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ, যারা প্রতিদিন বোমা ও গোলাগুলির মাঝে বেঁচে থাকার সংগ্রামে রত।