প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ২২:১৭
ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের হামেদান প্রদেশের আসাদাবাদ শহরে ইসরায়েলের চালানো এক ড্রোন হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির পুলিশপ্রধান মেজর হাবিবুল্লাহ আকবারিয়ান ও লেফটেন্যান্ট আমির হোসেইন সেইফি। রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইএসএনএ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই হামলার পর থেকে দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। হামলাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ইরানের ভেতরে ৭০টিরও বেশি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং কমান্ড অবকাঠামো। ইসরায়েল দাবি করেছে, এই অভিযানে তারা তেহরান পর্যন্ত তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে এবং রাজধানীর আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে।
হামলার সময় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তেহরানের আকাশে ড্রোন ও যুদ্ধবিমান টহল দেয়। ডেফরিন বলেন, আমরা এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছি যেখানে তেহরানের আকাশও আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। ইরানের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না এলেও, জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এই হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ৮০ জন নিহত এবং ৩২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের চারজন আহত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে দেশটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পাল্টাপাল্টি হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধের সূচনা হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এভাবে বাড়তে থাকলে তা আন্তর্জাতিক পরিসরেও নিরাপত্তাজনিত প্রভাব ফেলবে।
তেহরানে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী হলেও এই হামলা স্পষ্ট করেছে যে ইসরায়েল এখন রাজধানী পর্যন্ত সামরিক অভিযান চালাতে সক্ষম। এটি ইরানের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ইরান যে এর জবাবে পাল্টা কৌশল গ্রহণ করবে, তেমন ইঙ্গিত মিলছে দেশটির আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামরিক সূত্র থেকে।