প্রকাশ: ৪ মে ২০২৫, ১০:৫৮
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নতুন এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) পাকিস্তানের একজন সীমান্তরক্ষী রেঞ্জারকে আটক করেছে রাজস্থান সীমান্তে। তবে, তার পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এই ঘটনা ঘটেছে ঠিক এমন একটি সময়, যখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য পূর্ণম কুমার সাহুকে পাকিস্তান ২৩ এপ্রিল আটক করে। এ পরিস্থিতিতে, সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বেড়ে গেছে।
শনিবার রাতে বিএসএফের কর্মকর্তারা রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে। এ ঘটনার পরপরই কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করে, যা একে অন্য এক গুরুতর পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীও এই আক্রমণের জবাব দিয়েছে, এবং এই সংঘর্ষটিকে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ভুলক্রমে সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়া সৈন্যদের ফেরত দেওয়ার প্রচলিত প্রক্রিয়া থাকলেও, বর্তমানে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে এটি আর কার্যকর হয়নি। পাকিস্তান ভারতের বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে ফেরত দিতে রাজি হয়নি, আর ভারতের পক্ষ থেকেও এখনো পাকিস্তানি রেঞ্জারের ফেরত সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জার বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ার হেফাজতে আছেন। তার পরিচয় প্রকাশ না করলেও, এ ঘটনা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে এলওসি অঞ্চলে চলমান সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কাশ্মীরের বিভিন্ন সেক্টরে এই সংঘর্ষটি সংঘটিত হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনাটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে, কারণ কিছুদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের এই অবনতির কারণে, উভয় দেশ সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে উসকানি হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান নিজেদের সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে, এবং এর মধ্যে রয়েছে ট্যাংক, কামান, গোলা সহ অন্যান্য সেনা প্রস্তুতি। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেওয়া হয়েছে, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের জন্য আরো বড় এক সংকেত হয়ে উঠেছে।
এ পরিস্থিতি চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার পর, পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ভারতীয় বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।