কাশ্মিরের পেহেলগাঁও এলাকায় ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ভারত সরাসরি পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে। এমন একটি সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ভারতকে বলেছে বৃহত্তর সংঘাত যেন না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কাশ্মিরে হামলার জেরে ভারত যেন এমন প্রতিক্রিয়া না দেখায় যা পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে দিতে পারে। ফক্স নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং চায় শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক।
ভ্যান্স আরও বলেন, পাকিস্তানের উচিত ভারতের সঙ্গে মিলে হামলার দায়ীদের খুঁজে বের করা এবং শাস্তির আওতায় আনা। তার মতে, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা হলে তা অঞ্চলের জন্য মঙ্গলজনক হবে। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানের ভূখণ্ডে যদি সন্ত্রাসীদের আশ্রয় থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
পাকিস্তান একদিন আগেই সামরিক মহড়া চালিয়েছে, যা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশটির সেনাবাহিনী এই মহড়ায় আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার, সামরিক কৌশল ও প্রস্তুতির প্রদর্শন করে। এতে স্পষ্ট হয় যে, তারা সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং ভারতেরযেকোনো আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।
কাশ্মিরের পেহেলগাঁও অঞ্চলে যে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়, তা নিয়েই মূলত পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তান বলেছে, এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তাদের জড়ানো একেবারেই অমূলক।
এই ঘটনায় জাতিসংঘও উদ্বিগ্ন হয়ে বিবৃতি দিয়েছে। সংস্থাটি দুই দেশকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিকল্প নেই। তারা চায়, এই সমস্যা যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার এই পর্ব কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। এই মুহূর্তে সামান্য ভুল পদক্ষেপও পুরো উপমহাদেশে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের ভূমিকা এখন গুরুত্বপূর্ণ।