প্রবাস থেকে ফিরে স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখলেন স্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক
মইনুল হক মৃধা-রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:২৯ অপরাহ্ন
প্রবাস থেকে ফিরে স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখলেন স্বামী

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় দীর্ঘ ৮ বছর পর প্রবাস থেকে বাড়িতে ফেরার পর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখে চমকে গিয়েছিলেন স্বামী আলআমিন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপোচা জটু মিস্ত্রির পাড়া এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।


এলাকার বাসিন্দা আলআমিন, যিনি ইরাকে প্রবাসী ছিলেন, দেশে ফেরার পর বাড়ির অভ্যন্তরে স্ত্রী পপি (৩০) এর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পপি দীর্ঘদিন তার স্বামীর সঙ্গে ইরাকে ছিলেন, কিন্তু এই ৮ বছরে একবারও দেশে আসেননি। তাদের একমাত্র ছেলে সন্তান আদিব মন্ডল (১৩) রয়েছে। 


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পপি তার নিজ বাড়ির কাঠের আড়ার সাথে নিজের পরনের কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্বামী আলআমিন ঘটনাস্থলে এসে স্ত্রীর এই অবস্থায় চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন তড়িঘড়ি করে এসে দরজা ভেঙে পপিকে নিচে নামিয়ে ফেলে। ঘটনার পরপরই স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আজাদ মোল্লা জানান, পপি একজন সদালাপী ও ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি কখনোই এমন আচরণ করবেন, এমন ধারণা কেউ করেনি। সকালেও তিনি স্বাভাবিকভাবে সবার সাথে কথা বলেছেন, কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটলো, তা কেউ বুঝতে পারছে না।


গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। পরে, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনা ঘিরে নানা ধরনের সন্দেহ ও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, পপির আত্মহত্যার পেছনের কারণ এখনও স্পষ্ট হয়নি। একদিকে তার স্বাভাবিক আচরণ, অন্যদিকে এমন চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে এলাকাবাসী বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।


পপির মৃত্যু রহস্যে পুলিশের তদন্ত চলছে, এবং তারা আত্মহত্যার কারণ নির্ধারণে কাজ করছে। এছাড়াও, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, কিন্তু পুরো ঘটনাটি এলাকার মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে। 


এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে, এবং আশপাশের গ্রামের মানুষরা ঘটনাটিকে একেবারে অবিশ্বাস্য হিসেবে দেখছেন। যদিও আত্মহত্যার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে কিছুটা অস্বাভাবিকতার কারণে তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। 


স্বামী আলআমিনের জন্য এই ঘটনায় প্রচণ্ড শোকের মুহূর্ত আসলেও, পপির আত্মহত্যার পেছনের কারণ জানতে চাইছেন সবাই। তাদের একমাত্র ছেলে আদিব মন্ডল এর ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করছেন স্থানীয়রা। 


পপির মৃত্যু গোয়ালন্দের অন্যান্য পরিবারের কাছে এক ধরনের সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শোকের পাশাপাশি উদ্বেগ ও অজানা প্রশ্ন উত্থিত হয়েছে।